যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত ইস্যুতে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্ক। সদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ট্রাম্প প্রশাসন বাতিল করেছে বাইডেন সরকারের সময় জারি হওয়া সেই নির্দেশনা। যেখানে চিকিৎসকদের জরুরি পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করার অনুমতি ছিল।
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ ‘জরুরি চিকিৎসা ও প্রসব আইন’ অনুযায়ী, মা বা অনাগত সন্তানের জীবনহানির আশঙ্কা থাকলে গর্ভপাতকেও জরুরি চিকিৎসা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এই আইনটি ১৯৮৬ সালে চালু হয়। যেখানে বলা হয়, জরুরি অবস্থায় রোগীর আর্থিক অবস্থা না দেখে চিকিৎসা দিতে হবে। কেউ চিকিৎসা না পেলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে জরিমানা গুনতে হবে।
কিন্তু এখন ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, আগের ওই নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক মন্ত্রীর একটি চিঠি বাতিল করা হয়েছে। কারণ, সেগুলো বর্তমান প্রশাসনের নীতির সঙ্গে মানানসই নয়। তবে নতুন সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘জরুরি চিকিৎসা ও প্রসব আইন’ আগের মতোই থাকবে। আর কোনো গর্ভবতী নারী বা অনাগত শিশুর জীবনঝুঁকি থাকলে চিকিৎসা চালু থাকবে। তবে গর্ভপাত বাধ্যতামূলক চিকিৎসা হিসেবে থাকবে কী-না সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলা হয়নি।
এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে ঐতিহাসিক ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলার রায় বাতিল করে দেয়। ফলে ফেডারেল পর্যায়ে গর্ভপাতের অধিকার আর সংবিধানসম্মত নয়, প্রতিটি রাজ্য নিজ নিজ আইন তৈরি করার স্বাধীনতা পায়। এরপর থেকেই বহু রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ বা সীমিত করে আইন প্রণয়ন হয়েছে।
এই নতুন বিতর্ক নারী অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা নীতিমালা ও রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও প্রকট করেছে। বিভিন্ন অধিকারকর্মী ও চিকিৎসা সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলছে, এতে নারীদের জীবন আরো ঝুঁকির মুখে পড়বে।