যুক্তরাষ্ট্রে প্রথা অনুযায়ী, নির্বাচনের আগে দুই বড় দলের দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী তিনটি প্রকাশ্য বিতর্কে অংশ নিয়ে থাকেন। এবার বাইডেন ও ট্রাম্প কেউই তাতে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। বিতর্ক হবে কিনা তা নিয়ে টালবাহানা চলছিলো। শেষপর্যন্ত অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে, দুই পক্ষ আপাতত অন্তত দু’টি বিতর্কে অংশ নিতে সম্মত হয়েছে। প্রথম বিতর্ক ২৭ জুন সিএনএন-এর; দ্বিতীয় বিতর্ক ১০ সেপ্টেম্বর এবিসি-এর। বিস্তারিত হয়তো পরে জানানো হবে। বাইডেন ৮১, বিতর্কে তাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সংশয় উঠবে, প্রশ্ন থাকবে। ট্রাম্প ৭৭, তিনি মেজাজী হয়ে উঠতে পারেন। ২০২০ সালে তাদের মধ্যকার বিতর্ক যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিলো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো ছয় মাসের একটু কম সময় বাকি আছে। কে জয়ী হবেন বলা শক্ত। ট্রাম্পের জেতার সম্ভবনা উজ্জ্বল। দোদ্যুল্যমান (স্যুয়িং) স্টেটগুলোতে ট্রাম্প এগিয়ে আছেন, বরাবর এগিয়ে থাকছেন। এমনিতে বিভিন্ন স্টেট ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান শিবিরে বিভক্ত। দোদ্যুল্যমান স্টেটগুলোতে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়ে থাকে। নিউইয়র্ক টাইমস, সিয়েনা কলেজ ও ফিলাডেলফিয়া ইনকোয়ারার এক জরিপে বলছে, জর্জিয়া ও মিশিগান বা ক’টি দোদ্যুল্যমান স্টেট জিতলে ট্রাম্প জয়ী হবেন। জর্জিয়ায় ট্রাম্প-বাইডেন ৪৯-৩৯%, নেভাদায় ৫০-৩৮%, আরিজোনা ৪৯-৪২% ও পেনসিভানিয়া ৪৭-৪৪%। উইস্কন্সিনেও ট্রাম্প এগিয়ে।
আরিজোনার সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান স্ট্যান ব্রানস বলেছেন, ট্রাম্প ২০২০-তে আরিজোনায় হেরেছেন, গত ৬টি নির্বাচনে এমনটি ঘটেনি। এবার ট্রাম্প আরিজোনায় জিতবেন। ভোটাররা রিপাবলিকানদের ক’টি ইস্যু পছন্দ করছেন, যেমন ইমিগ্রেশন ও ব্যক্তিগত ফাইন্যান্স। রিপাবলিকান স্ট্র্রাটেজিস্ট জেসি হান্ট বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন সম্পর্কে মানুষের মনে যে নেতিবাচক ধারণা জন্মেছে, তা কাটিয়ে ওঠা দুষ্কর হবে। ট্রাম্প যে জনপ্রিয় তা নয়, তবে তিনি ক্ষমতায় নেই, যদিও মিডিয়ায় আছেন বহাল তবিয়তে। থার্ড পার্টি প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ফ্যাক্টর, উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। তিনি প্রার্থী হচ্ছেন, দোদ্যুল্যমান স্টেটগুলোর ব্যালটে তাঁর নাম থাকছে। তিনি হয়তো বাইডেন ও ট্রাম্পের ভোট কাটবেন কিন্তু বাইডেনের ভোট সামান্য বেশি কাটলে ট্রাম্পের কপাল খুলে যাবে। বাইডেনের পক্ষে কালো ভোট, হিস্পানিক ভোট, শহরতলী নারীদের ভোট কমছে, এঁরা মনে করছে যে, বুড়ো বাইডেন ঠিকমত তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছেন না। ওয়াশিংটন পোস্ট-ইপসস জরিপ বলছে, কালোরা হয়তো ভোট দিতেই যাবেনা। গাঁজা যুদ্ধের কারণে বাইডেন কিছু মুসলিম ভোট হারাবেন।
নভেম্বরে নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা হয়তো সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারেন। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় গভর্নর জিম জাষ্টিস জিওপি প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন। এ আসনে এখন ডেমোক্র্যাট জো মানচিন সিনেটর, তিনি অবসর নিচ্ছেন। ডেমোক্র্যাটরা এ আসনটি হারাবে তা প্রায় নিশ্চিত। আরও ৮টি সিট নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা চিহ্নিত। কংগ্রেসে রিপাবিকানরা এখন সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ, আগামী নির্বাচনে তারা সেটি ধরে রাখতে পারবেন কিনা তা বলা যাচ্ছে না। মার্কিন ভোটার কিন্তু একই সাথে কংগ্রেস, সিনেট ও হোয়াইট হাউস একটি দলকে দিতে চায় না।