আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে যেই নির্বাচিত হোক না কেন তিনি চায়নার প্রতি কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশের খুব কম মানুষই ওয়াশিংটন এবং বেইজিং এর মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে আশাবাদী। সবাই এই দুই পরাশক্তিকে একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে চায়। যে কারণে দীর্ঘ মেয়াদে দেশ দুটির লড়াই দেখতে প্রস্তুত দেশের ভোটাররা। বেইজিংয়ের ব্যস্ততম স্থানগুলোতে অ্যামেরিকান বিভিন্ন ফুড চেইন ও অন্যান্য দ্রব্যের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বিশ্বের বড় দুই পরাশক্তির মধ্যে তিক্ত সম্পর্কের মধ্যেও চায়নাতে অ্যামেরিকান খাবার, ফ্যাশন সামগ্রী ও আইফোনের চাহিদার কোন কমতি নেই।
তবে আসন্ন নির্বাচনের দুই প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প ও কামালা হ্যারিস এ পর্যন্ত তাদের নির্বাচনি প্রচারে চায়না নিয়ে যে মন্তব্যগুলো করেছেন সেগুলোর বেশিরভাগই ছিল নেতিবাচক সমালোচনা। তবে চায়নার নাগরিকরা মনে করছেন অ্যামেরিকার নেয়া যেকোন পদক্ষেপের বিপরীতে তাদের দেশও কঠোর অবস্থানে যেতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নির্বচানে যারই জয় হোক, দুই দেশের মধ্যকার তিক্ত সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আসবে না। চায়নার সঙ্গে ট্রাম্পের গৃহীত কঠোর বাণিজ্য নীতির পর বাইডেনও অ্যামেরিকায় চাইনিজ পণ্য আমদানির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন। কামালা হ্যারিসও একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ট্রাম্পও আমদানিকৃত চাইনিজ পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপসহ সব ধরনের বিদেশি পন্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের অঙ্গীকার করেছেন। এতে করে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে চায়নার সঙ্গে শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন মাত্রা পাবে। তবে এমনটি হলে সম্পর্কের আরও অবনতি হতে পারে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ট্রাম্পকে অবশ্যই অ্যামেরিকার জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সব সমস্যার সমাধানে আগ্রহী হতে হবে।
বাণিজ্যিক বিষয় ছাড়াও তাইওয়ান ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে পরস্পরবিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। চায়নার ধারণা তাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার উপযোগী করেই নিজেদের তাইওয়ান নীতি সাজিয়েছে অ্যামেরিকা। উভয় পক্ষের মধ্যে সম্প্রতি যোগাযোগের ক্ষেত্রে যৌথ প্রচেষ্টা দেখা গেলেও তাদের নীতিনির্ধারকদের একসঙ্গে কাজ করার সম্ভাবনা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি দেশ দুটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও তেমন কোন ইতিবাচক ফল আসেনি।