জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি জহুরা বেগমের সঙ্গে উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মাহবুবুর আলমের (লাভলু) মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মহিলা লীগ নেত্রীর নাম মামলা থেকে বাদ দিতে যুবদল নেতাকে প্রতিশ্রুতি দিতে শোনা যায়।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকালে ওই দুজনের কথোপকথনের ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড ফেসবুক মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওটি যাচাই করা এবং তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে যুবদল নেতা মাহবুবুর আলম স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন, একটি ছেলে তাকে ওই ফোন ধরিয়ে দিয়েছিল। তিনি সহজ-সরল মানুষ। তাকে কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
জহুরা বেগম বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সদ্য অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। গত ৪ আগস্ট বকশীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ১ নভেম্বর ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন গোলাম মোস্তফা নামের এক বিএনপি নেতা। ওই মামলার ৩২ নম্বর আসামি জহুরা বেগম।
ওই মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া নিয়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রী ও যুবদল নেতার মধ্যে মোবাইল ফোনে কথোপকথন ফাঁস হয়। এতে সালাম ও কুশলবিনিময়ের পর জহুরা বেগম বলেন, ‘এখন এটা (তার নাম) কি চার্জশিট থেকে কাটা যাবে?’ উত্তরে মাহবুবুর আলম বলেন, ‘চার্জশিট থেকে কাটা যাবে। তখন আপনি যোগাযোগ কইরেন, কাইটে দিমুনি।’
জহুরা বেগম আবারও বলেন, ‘এখন কোনোকিছু করা যাবে না?’ উত্তরে মাহবুবুর আলম বলেন, ‘এখন তো কিছু করা যাবে না। তবে মানিক ভাইয়ের (উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগর) সঙ্গে বসে কথা বলতে হবে।’
কথোপকথনের ব্যাপারে জানতে জহুরা বেগমের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে যুবদল নেতা মাহবুবুর আলমকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মাহবুবুর আলম বলেছেন, ‘একটি ছেলে আমাকে ফোন ধরিয়ে দিয়েছিল। আমি সহজ-সরল মানুষ। সে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।’
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মানিক সওদাগর বলেন, ‘ফোনালাপটি শুনেছি। আমার নামটি কেন বলেছেন, বিষয়টি জানি না। মামলা আমরা করছি। তারা (আসামিরা) পলাতক। তাদের সঙ্গে আবার কীসের আলাপ? যেটুকু শুনেছি, সেটা হলো, একটি কাজের বিষয়ে কথা বলছিল। তার এন্টি গ্রুপ (বিরোধীপক্ষ) কাজটি করছে। মাহবুবুর আলম নিজের ফোনে নয়, অন্য একজনের ফোনে কথা বলেছেন। তারপরও বিষয়টি জেলা যুবদলের আহ্বায়ককে জানানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি কয়েকজন সাংবাদিকের কাছ থেকে শুনেছি। আমি ওই ফোনালাপ শুনিনি। বিষয়টি শুনবো এবং সত্যতা যাচাই করব। সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’