পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ দেড় বছর বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১২ জানুয়ারি অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দেড় বছর আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বে থাকবেন।
এই আদেশের ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও আইজিপির দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইজিপির দায়িত্ব পান এই পুলিশ কর্মকর্তা। এর আগে আর কোনো আইজিপির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। অর্থাৎ আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে পুলিশ বাহিনীতে নতুন রেকর্ড হলো। বেনজীর আহমেদ অবসরে যাওয়ার পর আইজিপি হিসেবে র্যাবের তৎকালীন প্রধান আবদুল্লাহ
আল-মামুনকে নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন প্রকাশ হয়। আবদুল্লাহ আল-মামুন ৩০ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব বুঝে নেন। চাকরির বয়সমীমা পূর্ণ হওয়ায় তার ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই গতকাল প্রজ্ঞাপনে তার অবসরোত্তর ছুটি এবং অন্যান্য সুবিধা স্থগিত করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের আদেশ দেয় সরকার।
বেনজীরের মতোই পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র্যাব থেকে আইজিপির দায়িত্বে আসেন আল-মামুন। বেনজীর আইজিপি হওয়ার পর ২০২০ সালে র্যাব মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান তিনি। এর আগে তিনি সিআইডিপ্রধানের পদে ছিলেন। এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (প্রশাসন), ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিসিএস অষ্টম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেড ১-এ পদোন্নতি পান। কর্মক্ষেত্রে অবদানের জন্য আল-মামুন রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক ও বাংলাদেশ পুলিশ পদকে ভূষিত। তার চাকরির মেয়াদ যে দেড় বছর বাড়ছে এ ব্যাপারে গতকালই দৈনিক আমাদের সময়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, আর এক বছর পর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বর্তমান আইজিপির মেয়াদ বাড়ানো কিংবা নতুন কোনো কর্মকর্তাকে আইজিপির দায়িত্বে বসাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন সর্বোচ্চ বিবেচনায় রাখা হয়। কারণ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামনের দিনগুলোয় টালমাটাল হতে পারে। এমন পরিস্থিতি দূরদর্শী দৃষ্টি এবং ঠা-া মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে আবদুল্লাহ আল-মামুনকেই পরবর্তী আইজিপি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। এই পদে গত কিছুদিন ধরে বেশ কয়েকজন অতিরিক্ত আইজিপির নাম আলোচনায় ছিল।