বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন আজ। ইতোমধ্যেই ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত টঙ্গীর তুরাগ তীর। বাদ ফজর থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা আলেমরা বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান করছেন। আর ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করছেন ঈমান, আখলাক ও দ্বীন নিয়ে করা সেসব বয়ানে।
আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হতে পারে। এর আগে হেদায়েতি বয়ান করা হবে। আশা করা হচ্ছে, বিশ্ব তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হবে।
এতে প্রায় ২৫-৩০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আয়োজকদের ধারণা। ইজতেমার প্রথম পর্বে শিল্প নগরী টঙ্গী ইতোমধ্যেই ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। আজ সকাল থেকেই টঙ্গী শহর ও ইজতেমাস্থলের আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া টঙ্গী অভিমুখী বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছিল ইজতেমামুখী মানুষের ভিড়। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে।
ইজতেমা মাঠে আজ দিনের শুরুতে বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা খোরশিদুল হক। সকাল ১০টায় বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইবরাহিম দেওলা, আরব জামাতের জন্য বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আহমদ লাট, বোবা ও বধিরদের জন্য বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা সানোয়ার, বিদেশি জামাতের মুসল্লিদের জন্য ইংরেজিতে বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা ইফতার জামান। বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ফারুক। বাদ আসর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা যুহাইরুল হাসান এবং অনুবাদ করবেন মাওলানা জোবায়ের।
সকালের বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। এ মেহনত খুলুসিয়াত ও আজমতের সঙ্গে যারা করবে তাদের যে কোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়। বয়ানে বলা হয়, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যেককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ঈমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।
ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দুতে হলেও অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ইজতেমা মাঠে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন। নামাজে অংশ নিতে গাজীপুর ও ঢাকাসহ আশপাশের জেলার মুসল্লিরা সকাল থেকে মাঠে আসতে শুরু করেন। দুপুরের আগেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর স্থান না পেয়ে সড়ক ও অলিগলিসহ বিভিন্ন স্থানে পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ, চাদর ও পলিথিন বিছিয়ে মুসল্লিরা জুমার নামাজে শরিক হন।