জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ

ইউরোপের বাজারে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৩৮

রপ্তানি খাতের চারদিকে যখন অস্বস্তি, তখন ইউরোপের বাজার থেকে স্বস্তির খবর পেলেন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা। ইউরোপের বাজারে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আগের বছরের তুলনায় ৩৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ পোশাক বেশি কিনেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই সময়ে চীনের পর বাংলাদেশই ইইউতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ পোশাক রপ্তানি করেছে।
দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশি পোশাকের গুণগত মান ভালো হওয়ায় ইইউভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে বেশি পোশাক আমদানি করে। এ ছাড়া সস্তা শ্রম থাকায় কম দামে পোশাক কিনতে পারে তারা।
ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধিতে দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বাড়ার ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে চীন সবার শীর্ষে। তবে প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী ইউরোপের ক্রেতারা এখনো বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে গ্রিন ফ্যাক্টরি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর ২০২২ সময়ের মধ্যে সারা পৃথিবী থেকে ৯৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে ইইউ। ২০২১ সালে একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত বছর জানুয়ারি-নভেম্বর সময়ে বাংলাদেশ থেকে ২১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে ইইউ। বাংলাদেশ ইইউর জন্য পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস।
চীন ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ইইউতে সর্ববৃহৎ পোশাক সরবরাহকারীর অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২২ সালের প্রথম ১১ মাসে চীন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি ২৭ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
একই সময়ে তুরস্কের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। তুরস্ক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি ১১ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভারত থেকেও আমদানি ৪ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
অন্য শীর্ষ সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, মরক্কো, শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমদানি যথাক্রমে ৩৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, ২৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং ২৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ৩ হাজার ২৪৫ কোটি ডলার বা প্রতি মাসে গড়ে ৪৬৪ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতি মাসে গড়ে ৫২০ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে।
এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে যা হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। শতাংশের হিসাবে ২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।