যাত্রাবাড়ীতে প্রায় ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, সেখানে পুলিশও ছিল ৩০০-৫০০। কিন্তু প্রত্যেককে ধরা হবে না। তাদের কমান্ডারদের ধরা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, যদি অপরাধ প্রমাণ করতে চাই এবং কীভাবে শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে সে জন্য গ্রাউন্ড লেভেলে (মাঠ পর্যায়ে) নিষ্ঠুরতম কাজ যারা করেছেন তাদের কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। এমন নয়, যাত্রাবাড়ীতে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষকে মারা হয়েছে, সেখানে ৩০০, ৪০০, ৫০০ পুলিশ ছিল। প্রত্যেককে আমরা ধরবো না। আমরা তাদের কমান্ডারদের ধরব।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় ছয় তরুণের লাশ পোড়ানোর মামলায় মুকুল চোকদার নামের পুলিশের এক সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সেখানে (সাভারের আশুলিয়া) তখন যিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন তিনি পালিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। তার ওপরে যে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তার ওপর আইজিপি ও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। সুপিরিয়র কমান্ড স্ট্রাকচার (সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা) থেকে নিচ পর্যন্ত গেছে। তারা মাঠপর্যায়ে এগুলো বাস্তবায়ন করেছেন।
আশুলিয়া পুলিশের ভ্যানগাড়িতে মরদেহ পোড়ানোর বিষয়ে তাজুল ইসলাম আরও বলেন, যখন ঘটনাটি সরাসরি প্রমাণের প্রশ্ন আসবে একেবারে অকাট্য প্রমাণ পাব যে তারাই সরাসরি লাশে আগুন দিয়েছেন। তখন তাকে ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গত মঙ্গলবার আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার মামলা (বিবিধ মামলা) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নথিভুক্ত হয়। সে দিনই ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও সেখানে কর্মরত চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হলো।
মুকুলকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করলে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেয়। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান।
ট্রাইব্যুনালে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। এসময় বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় ছয় তরুণের লাশ পোড়ানোর মামলায় মুকুল চোকদার নামের পুলিশের এক সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।