অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। আপনি যদি ডেট দিতে না পারেন, আরেকটু অপেক্ষা করেন, আমরাই ডেট দিয়ে দেব।’
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকাল ৩টায় খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট হল মিলনায়তনে ‘গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক মহানগর বিএনপির আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সরকার ও ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ করে বলেন, তারেক রহমান এখনো চূড়ান্ত নির্দেশনা দেননি। যখন দেবেন, তখনই বাংলাদেশ অচল হয়ে যাবে।
সভায় দুদু বলেন, বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মহিলা দল সবই মাঠে আছে। যারা এখন বিএনপিকে ছোট করার চেষ্টা করছেন, তারা জানেন না—গত ১৭ বছরে আমাদের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, অনেকে গুম হয়েছেন। যদি আমরা আন্দোলনে না থাকতাম, এই সরকারের পতন বহু আগেই হতো।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের যারা কর্মচারী—এখানে পুলিশ, প্রশাসন যারা দেশের মানুষের অর্থে চলে, আর সেখানে আপনি যদি নববধূর মতো আচরণ করেন; তাহলে আমরা কী করব। আমাদের তো একটা ডেট দরকার, দরকার না। এখন পাত্রী আমরা দেখতে গেছি, পছন্দ হইছে। একটা দিন বলতে হবে না। দিন না বললে তো আমরা কাউকে দাওয়াত দিতে পারব না। দিন বলবেন না দাওয়াত দিয়ে কী হবে।’
শামসুজ্জামান দুদু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নেতার নেতা উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে অপেক্ষমাণ জাতির প্রত্যাশাকে পূরণ করেছিলেন। তার রাষ্ট্রক্ষমতাকালীন সাড়ে ৩ বছরে একটি নয়া পয়সারও দুর্নীতি নেই। আগামী দেড়শ বছরেও তার কোনো দুর্নীতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি এমন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, যার মৃত্যুর পর একটি প্লট, ব্যাংক ব্যালেন্স বা সম্পদ ছিল না। তিনি জাতিকে একতাবদ্ধ করেছিলেন।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ড. ইউনূস সংস্কারের কথা বলছেন, আগেতো তার সংস্কার হওয়া উচিত। উচ্চ আদালতে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর নির্দেশ দিলেও তিনি ও তার উপদেষ্টারা তা হতে দেননি। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করেছেন। পদত্যাগ নাটক করেছেন। হাসিনার মতো বিনিয়োগ সম্মেলনের নামে ৫ কোটি বিনিয়োগ করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ উচ্চারণ করেছেন, আর ড. ইউনূস সরাব আগে গ্রামীণ ব্যাংক, সবার আগে টাকা দেব না ছয় মাসের; সবার আগে বিদেশে লোক পাঠাবো- লাইসেন্স নিব বলছেন। তিনি রাষ্ট্রের আমন্ত্রণে কোথাও যাননি, ব্যবসার কাজে গেছেন।
তিনি বলেন, জামায়াত ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেখানে তাদের স্ত্রীরা ভোট দিলে তা ধানের শীষে যাবে। তাই নারীসহ মানুষের অধিকার আদায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. মোমরেজুল ইসলাম। বক্তব্য দেন সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী শেখ শামসাদ হোসেন আবিদ, চিকিৎসক হুমায়ারা মুসলিমা বাবলি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী ও মাসুদ পারভেজ বাবু।