চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন বৈষম্যবিরোধী নেতা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩০ মে ২০২৫, ১১:৩২

গাজীপুরের শেরেবাংলা রোড এলাকায় এক ভয়াবহ চাঁদাবাজির ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে একটি পরিবার। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠনের পরিচয়ে একদল যুবক গভীর রাতে ওই বাসায় ঢুকে প্রথমে নগদ অর্থ আদায় করে এবং পরদিনের মধ্যে আরও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে হুমকি দেয়। ঘটনার পর পরিবারটি পুরো বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর বাস্তবতা—বাসার মালিকের নামে নেই কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের ভাষ্যমতে, বুধবার রাত ১১টার দিকে প্রথমে দুজন যুবক ‘বাসা ভাড়া নিতে চান’ বলে পরিচয় দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢোকেন। পরে আরও সাত-আটজনের একটি দল বাড়িতে প্রবেশ করে। অভিযুক্তরা নিজেদের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতা ও প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে পরিচিত করে জানায়, বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে এবং তিনি যদি “সমঝোতায় না আসেন”, তাহলে নিচে অপেক্ষমাণ পুলিশের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এই ভয়ভীতির পরপরই তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, পরদিনের মধ্যে পরিবারকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তা না হলে “ভয়াবহ পরিণতির” মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
চরম ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে ঘরে থাকা ২০ হাজার টাকা এবং ওপর তলার ভাড়াটিয়াদের সহায়তায় আরও ৬ হাজার টাকা ম্যানেজ করে অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেন। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে ‘আসিফ’ নামের এক যুবক টাকা নিয়েছেন।
পরদিন সকালে পরিবারটি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডিবি এবং ডিএমপির বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করলে নিশ্চিত হয়—বাসার মালিকের নামে কোনো মামলা, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা গ্রেফতারি পরোয়ানা নেই। পরে তারা বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টারেও জানায়।
ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্তদের একে একে বাসায় প্রবেশ করতে দেখা যায়। ফুটেজে হলুদ গেঞ্জি পরিহিত একজন যুবককে চিহ্নিত করা গেছে, যিনি চাঁদা আদায়ের সময় দৃশ্যত নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন।
বর্তমানে পরিবারটি লিখিত অভিযোগ প্রস্তুত করছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”