আগামী ৫ আগস্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক উপদেষ্টা জনবিচ্ছিন্ন। তাদের কারণে সরকার দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সুতরাং এখনো সময় আছে ব্যবস্থা নিন।
বুধবার (২৩ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন এলডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। এর আগের দিন মঙ্গলবার রাতে ৪টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর বুধবার (২৩ জুলাই) আরও ১৩টি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সেলিম বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পরে এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর জন্য কেন রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? এর আগে সরকার কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বলেছি, সামনে রাজনীতি ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো দলের প্রতি যেন অনুরাগ অথবা বিরাগের বশবর্তী হয়ে সরকার পরিচালিত না হয়। আমরা দেখেছি, কোনো কোনো রাজনীতির দল প্রটোকল নিয়ে যেভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করে, এতে করে আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদ আরও তীব্র হচ্ছে। আমরা এই বিভেদ চাই না।
১২ দলীয় জোটের এ মুখপাত্র বলেন, আমরা গত বছর জুলাই আগস্টে যে রাজনৈতিক দলগুলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করার জন্য, জীবন উৎসর্গ করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, আমরা সবাই যেন আবার সেই ঐক্য ধরে রাখি এবং ঐক্যবদ্ধভাবে যেন কাজ করি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ময়দানে আমরা আমাদের বক্তব্য দেবো, কিন্তু সেই বক্তব্য যেন শিষ্টাচার বহির্ভূত না হয়।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দলকে এমনভাবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রটোকল দেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ। এ ধরনের প্রটোকল তাহলে রাজনৈতিক মহলে ভিন্ন একটি বার্তা বা ট্যাগ তৈরি হয়।
প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, সব সংকটের অবসান ঘটবে যদি আপনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন এবং নির্বাচন নিয়ে নতুন কোনো চিন্তা না করেন। আমরা আহ্বান জানিয়েছি পাঁচই আগস্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। তিনি আমাদের বক্তব্য শুনেছেন।
আমরা বলেছি, ভবিষ্যতে আপনি এভাবে আলাদা আলাদা এভাবে না ডেকে, কাউকে বড় দল কাউকে ছোট দল হিসেবে চিহ্নিত না করে সর্বদলীয়ভাবে বৈঠক করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান বলেন, অনেক রাজনৈতিক দলের প্রধান ব্যক্তি সচিবালায় গিয়েও অনেক উপদেষ্টা সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দেখা করতে পারেন না। আপনাদের অনেক উপদেষ্টা জনবিচ্ছিন্ন। তারা আপনাদের দুর্বল সরকার হিসেবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করেছে।
সুতরাং এখনো সময় আছে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন যখন সামনে এগিয়ে আসবে। তখন পতিত স্বৈরাচারের পক্ষ থেকে নানারকম উসকানিমূলক আচরণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হবে। সেগুলো যদি এখন থেকে শক্ত হাতে দমন না করেন তাহলে আমাদের পক্ষে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন জাতি উপহার পাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
এছাড়া মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নাই। সচিবালয়ে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, এখানে গোয়েন্দা বাহিনীর ব্যর্থতা ছিল বলেও বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে।