দলগুলোর দ্বন্দ্বের কারণে ফ্যাসিবাদ পুনরায় ফিরে আসতে পারে

মঞ্জু
ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৫ জুলাই ২০২৫, ২০:০১

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর রাজনীতির মাঠে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা দলগুলো এখন পারস্পরিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। এই দ্বন্দ্বে একদিকে আছে বিএনপি, আরেক দিকে জামায়াতে ইসলামী। তাদের এই দ্বন্দ্বের কারণে ফ্যাসীবাদী গোষ্ঠীর পুনরায় ফিরে আসার পথ সুগম হবে বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব মো. জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও বৈশাখী টিভির ব্যুরো প্রধান গোলাম মওলা মুরাদের পরিচালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন এবি পাটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক অ্যাড. গোলাম ফারুক, পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও হাটহাজারী থেকে এবি পার্টির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম পিএসসি, জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ লোকমান, চট্টগ্রাম মহাগর যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ আবুল কাসেম ও হায়দার আলী চৌধুরী।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দৈনিক কালের কণ্ঠের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি মুস্তফা নঈম। উপস্থিত ছিলেন বাসসের সিনিয়র সাংবাদিক মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, ইসলামিক টিভির সাবেক ব্যুরো চিফ শহিদুল ইসলাম, নিউজ গার্ডেন সম্পাদক কামরুল হুদা, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ব্যুরো চিফ মজুমদার নাজিম, এই বাংলার নির্বাহী সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামন মিন্টু, দৈনিক দিনকালের ব্যুরো চিফ হাসান মুকুল, সাংবাদিক মাহাবুবুল মাওলা রিপন, মোহাম্মদ আলী পাশা, দিদারুল হক, মোহাম্মদ তোহাসহ অন্যান্য নেতারা।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, সম্প্রতি আমরা দেখছি কিছু কিছু নেতা তাদের বক্তব্যে, স্লোগানে রাজনৈতিক শালীনতা বা শিষ্টাচারের সীমা অতিক্রম করছেন। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও ক্ষমতার রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এই কাদা-ছোড়াছুড়ি বাড়ছে।
নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির বিপরীতে একটি নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার প্রচেষ্টা চলছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলন বা যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের কেউ কেউ ভেতরে-ভেতরে দুই শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলে জানা গেছে। দলগুলোর মধ্যে এমন বিভেদের জেরে ফ্যাসিবাদী শক্তির ফিরে আসার পথ তৈরি হয় কি না, সে আশঙ্কার কথা বলছেন তিনি।
তিনি বলেন, হাসিনার ফ্যাসিবাদকে উৎসাহিত করেছে কিছু সাংবাদিক নামের এক্টিভিস্ট। আওয়ামী লীগকেও রিকনসোলেশন করা যায়। তবে তার আগে তাদেরকে ভুল স্বীকার করতে হবে, জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। গণহত্যা, গুম, খুন, লুটপাট এবং দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার পরও যারা গলা উঁচু করে কথা বলে তাদের কপালে দুঃখ ছাড়া আর কিছু নেই।
আদর্শ, দল-মতের পার্থক্য থাকলেও ফ্যাসিবাদের প্রশ্নে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের কবলে পড়েছিল ইসলামিক টিভি আর দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা। এ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়ে গিয়েছিল। নির্যাতন আর নিষ্পেষণের যাঁতাকলে পিস্ট হয়েছিল সাংবাদিক সমাজ। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও আমাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ফরম পূরণ করার পর সদস্য হতে দেয়নি ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকেরা। তারা পুরাতন অনেক সাংবাদিককেও সদস্য করেনি। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের শেল্টার দিতো এই দলকানা সাংবাদিকরা। সাধারণ জনতকে গুলি করতে উৎসাহ দিত এই সাংবাদিকরা। আমাদের ভুলের কারণে যাতে ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয় সেই ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
এবি পার্টির সভাপতি বলেন, যাত্রাবাড়ী ও ভান্ডারিয়ায় জুলাইয়ের আন্দোলনে একটা মরলে আরেকটা আগাইয়া আসে, কীভাবে আন্দোলন দমানো যাবে বলে আক্ষেপ করেছে সেই ফ্যাসিবাদী পুলিশ। যাদের আমরা কখনো নাম শুনিনি সেই সারজিস, নাহিদ ও হাসনাতরাই আমাদের নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। দলগুলো ১৫/১৭ বছর আন্দোলন করে সফল হয়নি। সেই সব রাজনৈতিক দলকে মনে রাখতে হবে- ঐক্য ও সংহতির ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই।