সাংবাদিকদের সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন 

কোনো অনৈতিক চাপ এলে পদত্যাগ করব 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫০

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অনৈতিক চাপ এলে আমি পদত্যাগ করব। নির্বাচন হবে কি হবে না, এ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের ভেতর আমরা যেতে চাই না। প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
আজ শনিবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে মতিবিনিময়সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে যাতে নির্বাচন হয় তার জোর প্রস্তুতি চলছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়ে গেছে ইনশাআল্লাহ।
ভোটের জন্য কেনাকাটা এগিয়ে চলছে। সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করেছি। আগামী রবিবার থেকে নির্বাচনী সীমানার শুনানি শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি চলবে।
তিনি আরো বলেন, ‘ভোট আসতে আসতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যারা বাক্স দখল করার স্বপ্ন নিয়ে আছেন তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। ভোটকেন্দ্র দখলের ইতিহাস ভুলে যান। আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। ভোট কেন্দ্র দখল করলে পুরো ভোট বাতিল করা হবে।
যারা অস্ত্রবাজী করে ভোটে জিততে চাইবেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। 
স্ট্রাইকিং ফোর্স নয়, সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সদস্যদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনী যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হয় সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সংবিধানে নেই। এর বাইরে আমরা যেতে পারি না। এটা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আমি এর মধ্যে ঢুকতে চাই না। যদি আইন পরিবর্তন হয় তাহলে হবে। 
যে সমস্ত কর্মকর্তা বিগত নির্বাচনগুলোতে সহায়তা করেছিল তাদের কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে ৫৭০০ কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদেরকে কোথায় পাঠাব? যারা স্বপ্রনোদিত হয়ে বিগত নির্বাচনে অনিয়ম করেছিলেন, সেইসব নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাখা হবে না।’
সরকারের পক্ষে কোনো চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন নিয়ে আমাকে এখন পর্যন্ত কোনো চাপ দেয়নি। আমাকে চাপ দিলে আমি পদত্যাগ করব, চেয়ারে থাকব না। আমাদের বলতে তো দ্বিধা নেই। যেদিন সরকার চাইবে সেদিন নাসির উদ্দিন এই চেয়ারে থাকবে না। যেদিন সরকার চাইবে- তার মতো করে কাজ করতে হবে, আমাকে এই চেয়ারে দেখবেন না। সেই গ্যারান্টি আমি দিতে পারি।’
সিইসি আরো বলেন, ‘সুষ্ঠ ভোট অনুষ্ঠানের জন্য আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা সর্বশক্তি দিয়ে পূরণ করব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে গুজব ছড়ানো হয় সেটি প্রতিরোধ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিষয় বিশ্বাসের আগে এর ফ্যাক্ট চেকিং করতে হবে। সত্য ও মিথ্যা দেখে তার পর যেন বিশ্বাস স্থাপন করে। এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা ১৮ কোটি জনগণের পক্ষে ও ভোটারদের পক্ষে। আমরা কারো কোনো অন্যায় আবদার শুনব না। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করব। সেই নির্দেশনা অফিসারদের দেওয়া হয়েছে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে। তারা রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রম চালাতে পারবে না। বিচারের রায় আসা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। রায় কি আসে সেটি দেখতে হবে। তারপর বলা যাবে আওয়ামী লীগ ভোটে থাকতে পারবে কিনা।