নিউইয়র্কে ঝুঁকিতে অভিবাসী হোম কেয়ার কর্মীরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪:১০


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অভিবাসন নীতির কারণে নিউইয়র্কে অভিবাসী হোম কেয়ার কর্মীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। হাইতি থেকে আসা জিনা পলিকার্ডের মতো শত-সহস্র কর্মীর কর্মসংস্থান ও বৈধতা নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
পলিকার্ড ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এসে অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদা (টিপিএস) পান এবং ২০২৩ সালের শেষ দিকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হোম হেলথ এইড হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে হাইতির জন্য টিপিএস সীমিত করেছে এবং কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের জন্য ঈঐঘঠ প্যারোল প্রোগ্রাম বাতিল করেছে। এতে হাজার হাজার অভিবাসীর ওয়ার্কপারমিট ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির পর শেষ হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনা এমন সময়ে ঘটছে যখন হোম কেয়ার খাত নিউইয়র্কে দ্রুত বাড়ছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এ খাতে ৫৭ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যা রাজ্যের মোট চাকরির প্রবৃদ্ধির ৩৮ শতাংশ। বর্তমানে প্রায় ৬.২৩ লাখ মানুষ নিউইয়র্কে হোম কেয়ার খাতে কাজ করছে- যা রাজ্যের সবচেয়ে বড় একক কর্মসংস্থান ক্ষেত্র।
অন্যদিকে, নিউইয়র্কে বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়ছে দ্রুত। ২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে মানুষের সংখ্যা ৫৩ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে আরও ২৫ শতাংশ বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এই সেক্টরে অভিবাসী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীলতা আরও বেড়েছে।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন নীতিতে মেডিকেড সুবিধা সংকুচিত হলে প্রায় ১৩ লাখ নিউইয়র্কবাসী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গভর্নর ক্যাথি হোকুল। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে হোম কেয়ার পরিষেবায়।
ব্রুকলিনের সিটি হেলথ হোম কেয়ার সার্ভিসেসের পরিচালক মার্টিন দুরোসো বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। বৈধ পারমিট না থাকলে কর্মীদের রাখতে পারছি না। এতে হঠাৎ কর্মীসংকট তৈরি করবে এটা ঠিক।’
হোম কেয়ার কাজ অনেক অভিবাসীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কর্মসংস্থানের পথ। এতে নমনীয় সময়সূচি থাকায় তারা ইংরেজি শেখা, নার্সিং বা অন্যান্য স্বাস্থ্য-পেশার লাইসেন্স পরীক্ষার প্রস্তুতির সুযোগ পান। কিন্তু কাজের বৈধতা হারালে সেই স্বপ্নও ভেঙে যেতে পারে।
পলিকার্ড বলেন, ‘আমি সনদপ্রাপ্ত নার্স হতে চাই। কিন্তু কাজ চালিয়ে যেতে পারমিট থাকা জরুরি। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ভরে গেছে।’
অভিজ্ঞ হোম কেয়ার এইড হারালে শুধু শ্রমবাজার নয়, রোগী এবং পরিবারগুলোও বড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দুরোসোর ভাষায়, ‘অনেক অভিবাসী এখান থেকে শুরু করে নার্স, থেরাপিস্ট, এমনকি ডাক্তার হয়েছেন। তাদের হারানো মানে রোগী ও গোটা স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য ক্ষতি।’