বিএনপিতে ‘তরুণদের’ মধ্যে মনোনয়ন পেতে পারেন যারা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:১৯

ভোটের মাঠ গোছাতে তৎপর হয়েছে বিএনপি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন কৌশল হাতে নিয়েছে দলটি। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে জেন-জি’কে গুরুত্ব দেবে দলটি। ভোটের মাঠে চমক দেখাতে তরুণদের সামনে আনার কথা ভাবছে ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা জনপ্রিয় এই দল। 
এবার দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। তাদের ভোট টানতে ইতোমধ্যে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিএনপি। এরই অংশ হিসাবে প্রার্থী মনোনয়নে অপেক্ষাকৃত তারুণ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে দেখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতারা এগিয়ে আছেন।
এরই মধ্যে নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় শতাধিক তরুণ নেতা গণসংযোগ শুরু করেছেন। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন লাভে তারা কেন্দ্রেও দৌড়ঝাঁপ করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা, দলের জন্য ত্যাগ, বিগত দিনের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা, দুঃসময়ে নেতা-কর্মীদের পাশে থাকা ও সাংগঠনিক দক্ষতা-এসব মানদণ্ড যাচাই করে প্রার্থী বাছাইপ্রক্রিয়াও প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বিএনপি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। মানদণ্ড হবে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, নির্বাচন করার ক্ষমতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা এবং বিগত আন্দোলনে তার অংশগ্রহণ কেমন ছিল।
অপেক্ষাকৃত তরুণ অন্তত শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী ইতোমধ্যে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মন জিতেছে। কেন্দ্রও তাদের ভূমিকায় খুশি।  
এবার বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় তৃণমূলে জনপ্রিয় তরুণদের দেখা যাবে। অপেক্ষাকৃত তরুণ অন্তত শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী ইতোমধ্যে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন—দলের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তিনি যশোর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে। এই আসনে তার বাবা বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম একাধিকবার এমপি হয়েছিলেন।  
বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক ঢাকা-১৬ আসনে মনোনয়ন চাইছেন। 
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী ঢাকা-৩ আসনে, তরুণ নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ঢাকা-৬ আসনে মনোনয়ন চাইছেন। ঢাকা-৭ আসনে ইসহাক সরকার ও হামিদুর রহমান হামিদ, ঢাকা-১০ আসনে ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম ও শেখ রবিউল আলম, ঢাকা-১৫ আসনে মামুন হাসান, ঢাকা-১৮ আসনে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের নাম আলোচনায় রয়েছে।
গাজীপুর-২ আসনে গাজীপুরের সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনি, মানিকগঞ্জ-১ আসনে প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু, নরসিংদী-৩ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, নরসিংদী-৪ আসনে আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, নরসিংদী-৫ আসনে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল ও ইকবাল হোসেন শ্যামল, টাঙ্গাইল-৩ আসনে মো. মাইনুল ইসলাম ও ওবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল-৫ আসনে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
তরুণ নেতাদের মধ্যে চট্টগ্রাম-২ আসনে সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসিরের ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল, চট্টগ্রাম-৭ আসনে প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১০ আসনে প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান, চট্টগ্রাম-১১ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরুর ছেলে ইসরাফিল খসরু, ফেনী-১ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নোয়াখালী-১ আসনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মামুনুর রশিদ মামুন, নোয়াখালী-৫ আসনে বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নোয়াখালী-৬ আসনে মাহবুবর রহমান শামীমের নাম এলাকার জনগণের মুখে মুখে ফিরছে।
তরুণ নেতাদের মধ্যে খুলনা-৩ আসনে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনে দলের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৬ আসনে সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন, বাগেরহাট-৪ আসনে বিএনপির ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বাগেরহাট-৩ আসনে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, মাগুরা-২ আসনে রবিউল ইসলাম নয়ন, ঝিনাইদহ-৩ আসনে আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ঝিনাইদহ-৪ আসনে সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যশোর-৩ আসনে প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর-৬ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ।
তরুণদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে বরিশাল-১ আসনে জহির উদ্দিন স্বপন ও আকন কুদ্দুসুর রহমান, বরিশাল-৪ আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, বরিশাল-২ আসনে দুলাল হোসেন ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বরিশাল-৫ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়েছেন। ভোলা-৪ আসন থেকে নুরুল ইসলাম নয়ন, ভোলা-১ আসনে গোলাম নবী আলমগীর, হায়দার আলী লেলিন, পটুয়াখালী-৩ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা হাসান মামুন, পটুয়াখালী-৪ আসনে এবিএম মোশাররফ হোসেন, পিরোজপুর-১ আসনে অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন ও হাফিজ আল আসাদ (সাঈদ খান), পিরোজপুর-৩ আসনে এআর মামুন খান এবং ঝালকাঠি-২ আসনে মাহবুবুল হক নান্নু ইতোমধ্যে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন।
তরুণ নেতাদের মধ্যে কুমিল্লা-২ আসনে অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, কুমিল্লার যে কোনো আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে ড. খন্দকার মারুফ হোসেনকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, নাটোর-১ আসনে তাইফুল ইসলাম টিপু, ডা. ইয়াসির আরাফাত রাজন ও ফারজানা শারমিন পুতুল, বগুড়া-৫ আসনে ফজলুর রহমান খোকন, জয়পুরহাট-২ আসনে প্রকৌশলী আমিনুর ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে গোলাম সারওয়ার, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে মো. রকিবুল করিম খান পাপ্পু।  নেত্রকোনা-১ আসনে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আলোচনায় রয়েছেন।
পঞ্চগড়-১ আসনে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ফরিদপুর-২ আসনে শামা ওবায়েদ, ফরিদপুর-৪ আসনে শহিদুল ইসলাম বাবুল, ফরিদপুর-৩ আসনে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, মাহবুবুল হাসান পিংকু, মাদারীপুর-৩ আসনে আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, শরীয়তপুর-৩ মিয়া নুরুদ্দিন অপু, গোপালগঞ্জ-১ আসনে সেলিমুজ্জামান সেলিম, গোপালগঞ্জ-২ আসনে সরদার মো. নুরুজ্জামান, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে এসএম জিলানীর নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে।