হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকায় অতিরিক্ত কাঁপুনিতে প্রায় দুই শতাধিক ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেশের অন্যতম গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানার কার্যক্রম বন্ধ করতে গ্যাসক্ষেত্র ঘেরাও করেছেন স্থানীয়রা। পরে সংসদ সদস্যের আশ্বাসে ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
রবিবার ( ৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটির কথা উল্লেখ করা হয়।
এতে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্যরা হলেন- সদস্য সচিব বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন ডেভেলপমেন্ট ও প্রোডাকশনের মহা ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন, সদস্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন।
এর আগে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র অবরোধ করেন স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের লোকজন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিজ্ঞপ্তি
স্থানীয়রা জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের করিমপুরে অবস্থিত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে এটি। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে প্রতিদিন ৩-৪ বার বিকট শব্দ ও অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়। এতে মাটি কেঁপে ফাটল ধরেছে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের ২০ গ্রামের দুই শতাধিক ঘর বাড়িতে। বিষয়টি একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি। যেকোনও মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিন কাটছে স্থানীয়দের।
শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ঘেরাও করে। এ সময় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানান স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. মাসুক আলী, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোমান হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়াকে অবগত করেন। পরে সংসদ সদস্য মোবাইল ফোনে বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানালে সরে যান স্থানীয়রা।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও অন্যান্য লোকজন বিষয়টি আমাকে জানালে আমি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আশ্বাস দিয়েছেন কেন অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে- বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে।
শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, আমাদের কোনও কারণে অতিরিক্ত কাঁপুনি হয়েছে বলে আমি নিশ্চিত নই, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।