বেইলি রোড ট্রাজেডি

অভিশ্রুতির লাশ মর্গেই পড়ে আছে, কাটেনি জটিলতা

ডেস্ক  রিপোর্ট
  ০৫ মার্চ ২০২৪, ১২:২৮

ডিএনএ পরীক্ষার ফলের জন্য আটকে আছে সংবাদকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টির লাশের ভাগ্য। গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে মাত্র দুজনের লাশ মর্গে পড়ে আছে। তার মধ্যে একজনের লাশ এখনো শনাক্ত হয়নি। অপরদিকে পরিচয় সংক্রান্ত জটিলতায় অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশের ভাগ্য নির্ধারণের বিষয় আদালত পর্যন্ত গড়ায়। জটিলতা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাউকে লাশটি হস্তান্তরও করতে পারছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, অভিশ্রুতিকে সন্তান দাবিদার কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শাবলুল আলম সবুজ শেখের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। লাশের ডিএনএ পরীক্ষার ফল পেতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ততদিন লাশের দাবিদার কাউকে হস্তান্তর করা সম্ভব নয়। পরিচয় শনাক্তের পর প্রকৃত দাবিদারকে লাশটি হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিচয় শনাক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই তরুণীর মরদেহ মর্গেই থাকবে। পরিচয় শনাক্ত হলেই শুধু তা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে পুলিশ। অভিশ্রুতির ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কাজী গোলাম মোখলেসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তারা লাশের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পুলিশ অভিশ্রুতির বাবা দাবিদার শাবলুল আলমের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এখন পুলিশ দুটি নমুনা অ্যানালাইসিস করে দেখবে। ম্যাচ করলে লাশটি হস্তান্তর করা হবে। এই নমুনা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ লাগে।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য রিপোর্ট ডটকমের সাংবাদিক অভিশ্রুতির জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ইডেন কলেজের তথ্য এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে বাবা-মায়ের নামে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও, স্থায়ী ঠিকানা সব জায়গায় একই। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গত শুক্রবার শাবরুল আলম সবুজ ঢাকা মেডিকেল বলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন। সেখানে তিনি একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেখান। তাতে ২০২১ সালের জুলাই মাসে নির্বাচন কমিশন থেকে তার যে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয়েছে, সেখানে তার নাম রয়েছে বৃষ্টি খাতুন। পিতার নাম সবুজ শেখ ও মাতার নাম বিউটি বেগম। শাবরুল আলম সবুজ বলেন, অভিশ্রুতি ওর নিজের দেওয়া নাম। ওটা সাজানো নাম। গ্রাম, স্কুল-কলেজ সব জায়গায় সবাই ওকে বৃষ্টি নামেই চেনে
এদিকে নির্বাচন কমিশন ও জন্মনিবন্ধনের বিভিন্ন তথ্যের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশনে তার পুরোনো জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করেছিলেন ওই নারী সাংবাদিক। সেখানে তিনি তার বৃষ্টি খাতুন নাম সংশোধন করে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী করার আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী বয়সও দুই বছর কমানোর আবেদন করেন। নাম সংশোধন করতে গিয়ে তিনি একটি জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। তাতে দেখা যায়, তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী, বাবার নাম শাবরুল আলম আর মায়ের নাম বিউটি বেগম। এই সনদে তার জন্মতারিখ রয়েছে ২৫ ডিসেম্বর ২০০০। তবে ওই জন্মনিবন্ধন সনদটির সত্যতা যাচাই করে দেখা গেছে, যেটি কুষ্টিয়ার আফরোজা খাতুন নামে এক নারীর জন্মসনদ, যার জন্মতারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০০০। ওই জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে বৃষ্টি খাতুন নাম সংশোধনের আবেদন করলেও নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য খুঁজে দেখা যাচ্ছে, তার এনআইডি সংশোধনের আবেদনটি এখনো গৃহীত হয়নি।