এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি 

‘নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ খালেদা জিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৪

লিভার সিরোসিসের জটিলতায় ফের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত শনিবার মধ্যরাতে ভর্তির পর তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে তার স্বাস্থ্যের বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট দেখে মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে কয়েকদিন থাকতে হতে পারে বলে তার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গতকাল রোববার সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের শরীর ভালো যাচ্ছিল না বলে গভীর রাতে হাসপাতালে এনে ভর্তি করাতে হয়েছে। এখন সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শনিবার রাতে হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই ম্যাডামের কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। মেডিকেল বোর্ড রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থাপত্র দেয়। দোয়া করেন ম্যাডামের জন্য। এর বেশি কিছু বলার নেই।
হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে শনিবার রাত ৩টার দিকে তার গুলশানের বাসা থেকে ছোট ভাই সাইদ এস্কান্দারের গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেই খবরে রাত ৪টার দিকে শতাধিক নেতাকর্মী এভারকেয়ারের বাইরে ভিড় করেন। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ফুসফুস, লিভার, কিডনির জটিলতাসহ বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে গতকাল বিকেলে এক ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া এখনো বন্দি অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তার কথা আমরা স্মরণ করব এবং আল্লাহর কাছে তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করব।
জানা যায়, গত বুধবার দুপুরের পর থেকে পেটে ব্যথা অনুভব করছিলেন খালেদা জিয়া। চিকিৎসকের পরামর্শে ওইদিন রাতেই তার হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাসায় গিয়ে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। অবস্থার কিছু উন্নতি হলে তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। তার সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পরপর বাড়ানো হলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।
সাময়িক মুক্তি পাওয়ার পর কোভিড, লিভার জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বিএনপি নেত্রীকে। এর মধ্যে গত অক্টোবরে মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।