ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। সেই আতঙ্কে অনেকেই হল ছেড়ে যাচ্ছেন। সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে অনেকেই বেরিয়ে যান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাত ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ছেন। কেন হল ছাড়ছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। হলে এসেছি পড়াশোনা করার জন্য। আমার রাজনীতি বা কোটা আন্দোলন—কোনোটার সঙ্গেই সংশ্লিষ্টতা নেই। হলে থাকার কারণে ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু আজ যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে আর সাহস পাচ্ছি না হলে থাকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে পরিবার বলে দিয়েছে বাড়ি ফিরে যেতে। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। ক্লাস শুরু হলে আসবো। তবে হলে হয়তো আর ওঠা হবে না।’
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হ্যান্ডমাইক নিয়ে প্রতিটি হলের মাঠে গিয়ে ‘কারও রাজনৈতিক চালের বলি’ না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
তাদের আরও বলতে শোনা যায়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা, আপনারা দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ আপনাদের হাতে। আপনারা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবেন। কারও রাজনৈতিক চালের বলি হবেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আপনার দায়িত্ব।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মোড় ও হলের সামনে তাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
শহীদুল্লাহ হলের সামনে গুলিবিদ্ধ নিউমার্কেট থানা ছাত্রলীগ নেতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে নিউমার্কেট থানার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল হাসান ফাহাদ (২৪) গুলিতে আহত হয়েছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফাহাদ নিজেই।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সামনে এ গুলির ঘটনায় তিনি আহত হন। ফাহাদ বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
ফাহাদ জানান, তিনি নিউমার্কেট থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাদের কাছে সংবাদ আসে শহিদুল্লাহ হলের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের নেতাদের মারধর করছেন। এমন খবরের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে তারা শহীদুল্লাহ হলের সামনে পৌঁছালে সেখান থেকে তাদের ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে লক্ষ্য করা যায় কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা এক যুবক কোমর থেকে পিস্তল বের করে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। সেই গুলিটি তার বাম পায়ের উরুতে বিদ্ধ হয়ে অপর দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। তার ধারণা, তাকে হত্যা করার জন্যই ২৬ থেকে ২৭ বছরের এক যুবক তাকে লক্ষ্য করে গুলি করেছেন। সেই গুলিটি তার পায়ে বিদ্ধ হয়। চিকিৎসকরা হাসপাতালে ফাহাদের চিকিৎসার টিকিটে গানশট উল্লেখ করেছেন।