নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

ডেস্ক রিপোর্ট
  ১৮ মে ২০২৫, ১৪:২৫

আগামী ২৩ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২০২৫, যা আয়োজন করছে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন। এ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রকাশক, লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠবে নিউইয়র্ক শহর।
বইমেলাকে ঘিরে প্রস্তুতি, কর্মসূচি ও নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আয়োজিত হয় এক সংবাদ সম্মেলন। গত ১৬ মে, শুক্রবার, জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বইমেলার আহ্বায়ক এবং ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, খ্যাতিমান সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার। তিনি বর্তমানে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটির পক্ষে মেলার দায়িত্বে আছেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সিইও বিশ্বজিৎ সাহা।
বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, উপদেষ্টা ড. নজরুল ইসলাম, গোলাম ফারুক ভূঁইয়া, সৌদ চৌধুরী এবং ওবায়দুল্লাহ মানুম।
এবারের ৩৪তম বইমেলার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন বন্ধু ফিলিস টেইলর। ১৯৭১ সালে, যুক্তরাষ্ট্র গোপনে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করলে, ফিলিস টেইলরের প্রয়াত স্বামী রিচার্ড টেইলর এবং তাঁর সহযোগীরা ফিলাডেলফিয়া ও বাল্টিমোর বন্দরে অস্ত্রবাহী জাহাজ অবরোধ করেন। বইমেলায় এ বিষয়কে ঘিরে থাকবে বিশেষ আয়োজন।
এছাড়াও, মেলায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি নতুন গ্রন্থের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে অংশ নেবেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ফিল্ড হাসপাতালের নেতৃত্বদানকারী ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. সিতারা বেগম, বীর প্রতীক। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. রেহমান সোবহান, গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক (কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়), এবং অধ্যাপক রওনক জাহান।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা বলেন, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই বইমেলা শুধু বইয়ের প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তবে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ কেউ বইমেলাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন, যা দুঃখজনক। বক্তারা জোর দিয়ে বলেন—মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু —এই শব্দগুলো কোনো বিতর্কের বিষয় নয়; এগুলো জাতির অহংকার।
বক্তব্যে আরও জানানো হয়, ১৯৯২ সালে ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ও ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’-এর যৌথ উদ্যোগে বইমেলার সূচনা হয়। পরবর্তীতে মুক্তধারা নিউইয়র্ক ও পরে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এককভাবে বইমেলার দায়িত্ব পালন করে আসছে। সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক এবং তরুণ প্রজন্মের সাহসী প্রতিনিধি।
এবারের বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে জামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে। সংবাদ সম্মেলনে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, আগের মতো এবারও সকলে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করে বইমেলাকে সফল করে তুলুন। এরই মধ্যে লেখক-প্রকাশকরা নিউইয়র্কে পৌঁছাতে শুরু করেছেন।
বক্তারা বলেন, বইমেলার অগ্রযাত্রায় শুধু মুক্তধারা ফাউন্ডেশন নয়, নিউইয়র্কের বাংলা জনসমাজ ও সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবারের মেলাও সফল হবে—এই প্রত্যাশা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে।