বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাডভোকেসি ডে (বিএএজি) গত মঙ্গলবার নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটেল আলবেনিতে তাদের অ্যাডভোকেসি ডে পালন করেছে। বিএএজি প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন ও জেনারেল সেক্রেটারি সাহানা মাসুমের নেতৃত্বে ৭৫ সদস্যের একটি গ্রুপ সকাল সাতটায় জ্যাকসন হাইটস ও জ্যামাইকা থেকে আলবেনির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আলবেনি পৌছার পর মোট ১৩টি ভাগে ভাগ করা হয় দলটিকে। প্রতিটি গ্রুপ পৃথকভাবে পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী স্টেট সিনেটর ও অ্যাসেম্বলিম্যানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবিগুলো পেশ করে, যে দাবিগুলোর কিছু এখনো স্টেট সিনেট ও স্টেট অ্যাসেম্বলিতে বিল আকারে ঝুলে আছে।
দাবিগুলোর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে মুসলিমদের দুই ঈদের দিন ছুটি ঘোষণা। উল্লেখ্য, কেবল নিউইয়র্ক সিটিতে ঈদের দিন পাবলিক স্কুলগুলোতে ছুটি থাকলেও সিটির বাইরের স্কুলগুলোতে তা নেই। দ্বিতীয় দাবি হচ্ছে নিউইয়র্কে একটি অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করা, যেটির কাজ হবে নিউইয়র্কে কোনো আইন পাস করার আগেস্টেট আইন প্রনেতারা যেন কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করেন। তৃতীয় দাবি হচ্ছে ফ্রি স্পিচ নিয়ে একচি আইন প্রণয়ন করা।
বিএএজি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বাক স্বাধীনতার বিষয়টি নিশ্চিত করা থাকলেও সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুসলিম ছাত্রদের হয়রানি করা হচ্ছে তাদের ফ্রি স্পিচের স্বাধীনতা প্রয়োগ করার কারণে। বিএএজি নিউইয়র্ক স্টেটে ফ্রি স্পিচ এর পক্ষে একটি আইন পাস করার জন্য দাবি জানিয়েছে। চতুর্থ দাবি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে ডিপোর্টেশনের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে একটি আইন পাস করা। এ সংক্রান্ত বিলটি এখনো স্টেট সিনেটে ঝুলে আছে। পঞ্চম দাবি হচ্ছে, বর্তমানে স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি রিলিজিয়াস ডিসক্রিমিনেশন আইন পাস করা। কারণ, সাম্প্রতিককালে দেখা গেছে, এখন স্কুলগুলোতে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরিধানের কারণে তারা কটাক্ষ ও বিদ্রƒপের শিক্ষা হচ্ছে। নিউইয়র্ক স্টে সিনেটে এ সংক্রান্ত একটি বিল স্পন্সর করেছেন স্টেট সিনেটর জন সি ল্যু।
ষষ্ঠ দাবি হচ্ছে ব্যাংকিং বিল অফ রাইটস। বিএএজি’র মতে সাম্প্রতিককালে মুসলিম হওয়ার কারণে অনেকের ব্যাংক একাউন্ট চিঠি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বিলটিও স্টেট সিনেটে বিবেচনাধীন। সপ্তম দাবি হচ্ছে এডুকেশন এন্ড ডাইভারসিটি অ্যাক্ট। কারণ এখানে বলা হয়েছে যে, কেবল ভাষাগত কারণে মিডল ইস্টার্ন ও আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বর্ণবাদী আচরণ করা হচ্ছে। অষ্টম দাবি হচ্ছে স্কুলগুলোতে বর্ণবাদী আচরণ দূর করার জন্য অধিক হারে মুসলিম টিচার, মুসলিম স্টাফ ও স্কুল পুলিশ নিয়োগ দেওয়া। এ সংক্রান্ত একটি বিল এখনো সিনেটে বিবেচনাধীন। বেলা দেড়টার পর সিনেটে প্রেস কনফারেন্সে বিএএজি’র সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন স্টেট সিনেটের রবার্ট জ্যাকসন ও অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন। দুপুরে বিএএজি’র প্রতিনিধিদলের সাথে স্টেট সিনেটর রবার্ট জ্যাকসন লাঞ্চে অংশগ্রহণ করেন।
বিকেল সাড়ে তিনটায় সিনেট অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে বিএএজি প্রতিনিধিদলকে অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। নিউইয়র্ক সিটির আবু হুরায়রা মসজিদের ইমাম মাওলানা ফায়েকউদ্দিন পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন। একই সাথে স্টেট অ্যাসেম্বলি অধিবেশনে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন জ্যাকসন হাইটসের আল-নূর কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মুফতি ইসমাইল।