প্রবাল প্রাচীর, নীল সমুদ্র-সাদা বালুকায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সারি সারি নারিকেল গাছ

ডেস্ক রিপোর্ট
  ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪১

প্রবাল প্রাচীর, নীল সমুদ্র আর সাদা বালুকাবেলার বাইরেও এক সবুজ আকর্ষণ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। পর্যটন মৌসুমে এই দ্বীপের ‘নারিকেল জিনজিরা’ বা সারি সারি নারিকেল গাছ পর্যটকদের কাছে যেন বাড়তি রোমাঞ্চের হাতছানি। সূর্যের আলোয় সাগরের নীলাভ ঢেউ আর নারিকেল পাতার সবুজের মিলনস্থল- সেন্টমার্টিন যেন প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক জীবন্ত শিল্পকর্ম।
জানা যায়, প্রতিবছর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এই নারিকেল গাছগুলো অন্যতম আকর্ষণ। সূর্যের আলো যখন সমুদ্রের পানির ওপর পড়ে এবং বাতাসে নারিকেল পাতা দুলে ওঠে, সেই প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক সেন্টমার্টিনে ছুটে যান। প্রবাল ও সমুদ্রের নীলাভ সৌন্দর্যের সঙ্গে নারিকেল জিনজিরার সবুজ আবহ মিলিয়ে সেন্টমার্টিনের আকর্ষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
তবে কক্সবাজারসহ অন্যান্য স্থানে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হলেও এ বছর এখনো সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকরা যাওয়া শুরু করেনি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী নভেম্বর মাস থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা ভ্রমণে যেতে পারবেন।
সৌন্দর্যের পাশাপাশি সারি সারি এসব নারিকেল গাছ জীবিকারও একটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য- এমনটিই বলছেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা তৈয়ব উল্লাহ। তিনি জানান, এই দ্বীপের ডাব পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়। দ্বীপের চারপাশে থাকা নারিকেল গাছগুলো আমাদের জীবিকারও বড় উৎস। তবে আগে শুধু গ্রামের মধ্যে গাছ ছিল। কিন্তু ধানের জমি, বালিয়াড়ি, জলাশয় ইত্যাদিতে গাছ ছিল না। এখন সব জায়গায় নারিকেল গাছ রোপন করা হয়।
তিনি জানান, সেন্টমার্টিনে স্থানীয় যেসব ব্যক্তিরা জমি বিক্রি করেছে সেগুলোসহ বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের ও পোকামাকড়ের কারণে নারিকেল গাছ সংখ্যা কমলেও এখন নতুন করে অনেকেই খালি জায়গায় নারিকেল লাগিয়েছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজুল ইসলাম জানান,সেন্টমার্টিন দ্বীপের অপর নাম নারিকেল জিনজিরা, এই নারিকেল জিনজিরাতে এক সময় নারিকেল ডাবে ভরপুর ছিল। দেশি-বিদেশি পযর্টকদের কাছে এই ডাবের চাহিদা বেশি। দ্বীপের চাহিদা পূরণ করে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামেও নিয়ে বিক্রি করা হত এসব ডাব।
তিনি বলেন, তবে পর্যটকদের কাছে ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও কয়েক বছর ধরে সেন্টমার্টিনের নারিকেল গাছে সাদা মাছির আক্রমণে অনেক গাছ মারা গেছে। এখন বেশির ভাগ নারিকেল গাছে ফল শূন্য।
ফয়েজুল ইসলাম জানান, এ বছর এখনও তো কোনো পযর্টক দ্বীপে ভ্রমণে আসেনি। তবে বিগত সময় ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে দ্বীপের নারিকেল গাছের সৌন্দর্য পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ জোগায়তো।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন জানান, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়। আমরা চাই এই সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখে পর্যটন ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করা। স্থানীয় জনগণের জীবিকা যেন টেকসই হয় এবং দ্বীপের পরিবেশ যেন রক্ষা পায়। নারিকেল গাছ গুলো থেকে পোকামাকড় রোধে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।