দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক
  ১৭ মে ২০২৫, ২১:২৪

দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিএমএ ভবনে এক আলোচনা সভায় তারা এ কথা জানান। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, কিডনি রোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ, যার অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ। তবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪.২ শতাংশ, যা খুবই অপ্রতুল।
তারা বলেন, দেশে উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি এবং উচ্চ রক্তচাপজনীত মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। সরকার এরই মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তবে টেকসই অর্থায়নের অভাবে দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এই সংকট মোকাবিলায় প্রতি বছর বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ কমাতে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কেন্দ্রিক করার কোনো বিকল্প নেই।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. এনামুল হক বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি বরাদ্দকৃত বাজেট সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অধিশাখা) মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন আইনগতভাবে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের পাশাপাশি এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণের সুপারিশ করেছে।
চ্যানেল আইএয়ের সিনিয়র নিউজ এডিটর মীর মাশরুর জামান রনির সঞ্চালনায় সভায় আরেও বক্তব্য রাখেন- কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. গীতা রানী দেবী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশাল মেডিসিন অনুষদের ডিন ও পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুল হক, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা, এনটিভির হেড অফ নিউজ জহিরুল আলম এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপন করেন প্রজ্ঞার সমন্বয়ক সাদিয়া গালিবা প্রভা।