ব্রেইনডেড এক ব্যক্তির দান করে দেওয়া কিডনি নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন তাহমিনা ইয়াসমিন পপি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের সময় তাহমিনা ইয়াসমিনের সিরম ক্রিয়েটিনিন ছিল ৯। এখন শূন্য দশমিক ৯-এ নেমে এসেছে। অর্থাৎ তিনি পুরোপুরি সুস্থ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জাতীয় ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের হাত থেকে ছাড়পত্র নিয়ে তিনি নিজ বাসায় ফেরেন।
ছাড়পত্র হস্তান্তরের সময় অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের একটি আন্দোলন হওয়া উচিত। এটি করা গেলে অনেক মৃত্যুপথযাত্রী মানুষকে সহজেই বাঁচানো যাবে। ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দুটি সফলতা দেখিয়েছি। এজন্য আমি ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্টের সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই যে মহৎ মানুষ প্রয়াত কামরাঙ্গীচরের বাসিন্দা মো. মাসুম আলম, তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার এবং তার পরিবারের প্রতি প্রতি যাদের ত্যাগের ফলে আজ এই তাহমিনা ইয়াসমিন পপি নতুন করে জীবন পেলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সারাহ্ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেলের আহ্বায়ক রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালসহ আরও অনেকে।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি বিএসএমএমইউর আইসিইউতে ঢাকার কামরাঙ্গীচরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী মো. মাসুম আলমকে ‘ব্রেইনডেড’ ঘোষণা করা হয়। এরপর অভিভাবকরা তার অঙ্গদানের সম্মতি দেন। ওদিন মো. মাসুমের একটি কিডনি গ্রহণ করেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ৪৯ বছর বয়সী তাহমিনা ইয়াসীন। আরেকটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় ৪৪ বছর বয়সী জাকির হোসেন নামে আরেকজনের শরীরে। এ কার্যক্রমের প্রধান সার্জন ছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল। অন্যদিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজিতে (এনআইকেডিউ) জাকির হোসেনের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।
দেশে প্রথমবারের মতো অঙ্গদান করেন সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছরের এক তরুণী। তাকে গত বছর ১৮ জানুয়ারি ‘ব্রেইনডেড’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সারাহর শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তা দুই জনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। সারাহর চোখের কর্নিয়াও দেওয়া হয় অপর দুজনকে। তারাও বর্তমানে ভালো আছেন।