তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে বরগুনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালসহ উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরগুনা সিভিল সার্জন প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল।
বরগুনা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ শিশু ও বয়স্ক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে শয্যা সংকটের কারণে অনেককেই হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
জেলার তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া এলাকার লিজা বেগম জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মেয়েকে গত শনিবার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে শুধু আইভি স্যালাইন দিচ্ছে। বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়াও হাসপাতালে কোনো শয্যা না থাকায় মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালে ভর্তি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আবদুল্লাহ নামে এক রোগী জানান, গত রোববার সকালে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসাসেবা ভালো হলেও হাসপাতালের পরিবেশ খুব নোংরা। এতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ৪৫ জন, আমতলীতে ১৭, তালতলীতে ৬, পাথরঘাটায় ৬, বামনায় ৩, বেতাগীতে ৬ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে জেলায় ৭৬২ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম নজমুল আহসান বলেন, হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ায় অনেক রোগী একসঙ্গে ভর্তি হয়েছে। এজন্য আমাদের চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ মৌসুমে ডায়রিয়া রোগ বেড়ে যায়। বর্ষা শুরু হলে ডায়রিয়ার প্রকোপ আবার কমে যাবে।
বরগুনা সিভিল সার্জন প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, বরগুনায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তন ও ময়লাযুক্ত পানি পান করাসহ নানা কারণে জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের স্টোরে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।