কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা চোখের যত্ন নেবেন কিভাবে

ডা. শওকত কবীর
  ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১৩:৪০

কম্পিউটার, ল্যাপটপ বলা যায় আমাদের নিত্যসময়ের সঙ্গী। অবসর বলুন আর কাজের সময় বলুন কম্পিউটারের সান্নিধ্য ত্যাগ করা মুশকিল। কিন্তু কম্পিউটারে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে কিংবা টানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে গুরুতর চাপ পড়ে। এ জন্য দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি, চোখ দিয়ে পানি পড়া ছাড়াও মাথাব্যথাসহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চললে কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের সমস্যাগুলো থেকে রেহাই পেতে পারেন।
কম্পিউটারে কাজ করার সময় মাঝেমধ্যে চোখের পলক ফেলা ভালো অভ্যাস। এতে চোখে আর্দ্রতার পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে এবং শুষ্কতা সৃষ্টি হয় না।
যথাযথ আলোর পরিবেশে কম্পিউটারে কাজ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলায় কম্পিউটার ব্যবহারের সময় মনিটরের উল্টোদিকে মনিটরে আলো প্রতিফলিত হয় এমন দরজা-জানালা বা লাইট বন্ধ রাখুন। কম্পিউটারটি এমন স্থানে ব্যবহার করুন, যেখান থেকে মনিটরে আলোর প্রতিফলন না ঘটে। আবার পুরোপুরি অন্ধকার ঘরেও কম্পিউটার ব্যবহার করবেন না। 
কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় পর্দার সঙ্গে আই লেভেল উচ্চতার সামঞ্জস্য রাখতে হবে। বিষয়টি চোখের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কম্পিউটারের ঔজ্জ্বল্য সহনীয় মাত্রায় রেখে কাজ করা উচিত। ঔজ্জ্বল্য বেশি হলে চোখের ওপর বেশি চাপ পড়ে এবং অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
কম্পিউটার স্ক্রিনে পড়া বা লেখার জন্য ছোট ফন্ট ব্যবহার করবেন না। চোখের জন্য আরামদায়ক ফন্ট নির্বাচন করুন। কারণ, ছোট ছোট লেখা চোখের ওপর বেশি চাপ সৃষ্টি করে। বয়স্করা এ ক্ষেত্রে কন্ট্রোল প্যানেলে গিয়ে ডিসপ্লেতে লেখা ও রেজুলেশন ঠিক 
করে নিন। 
কম্পিউটারের সামনে দীর্ঘক্ষণ ধরে কাজ করার সময় চোখ সুরক্ষার খুব উপযোগী একটি উপায় হচ্ছে ২০-২০-২০। প্রতি ২০ মিনিট পরপর কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিন এবং কমপক্ষে ২০ ফুট দূরের কোনো বস্তুর ওপর দৃষ্টিপাত করুন অন্তত ২০ সেকেন্ডের জন্য। চোখের বিশ্রামের জন্য ২০-২০-২০ নিয়মটি মেনে চললে চোখে যথেষ্ট আর্দ্রতা থাকে এবং চোখের ওপর চাপ কমে।
মনিটর নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। মনিটরে  জমা ধুলাবালি দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করে। ফলে মনিটরের অক্ষরগুলো পড়তে সমস্যা হয় এবং চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই কম্পিউটারে ধুলা, ময়লা কিংবা আঙুলের ছাপ পড়তে দেবেন না। প্রয়োজনে মনিটর গার্ড ব্যবহার করুন।
লেখক: চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ