পিঠের তীব্র ব্যথায় করণীয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক
  ২৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৩

সায়াটিকা বাতের ব্যথা নয়। এটি আসলে একধরনের স্নায়ুজনিত সমস্যা। আমাদের পিঠে কশেরুকা দিয়ে তৈরি মেরুদণ্ড বা স্পাইনের ভেতর দড়ির মতো স্পাইনাল কর্ড সুরক্ষিত থাকে। এর দুই পাশ থেকে একটি করে নার্ভ বের হয়। নার্ভগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের অনুভূতি ও কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।

এসব নার্ভ কশেরুকা থেকে বের হয় খুব সরু ছিদ্র দিয়ে। কোনো কারণে ছিদ্রগুলো সংকুচিত হলে নার্ভে চাপ পড়ে। এ কারণে প্রদাহ, ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দেয়। এই সমস্যা সাধারণত হার্নিয়েটেড ডিস্ক, মেরুদণ্ডের হাড়ের স্পার বা মেরুদণ্ডের সংকীর্ণতার (স্পাইনাল স্টেনোসিস) কারণে হয়। সায়াটিকা নার্ভটি ঊরু ও হাঁটুর পেছনে উল্লম্বভাবে নিচের দিকে চলে যায়। এটি হ্যামস্ট্রিং পেশি ও পায়ের মধ্যে বিস্তৃত থাকে। যদি কোনো কারণে এতে চাপ পড়ে বা প্রদাহ হয়, তখন যে তীব্র ব্যথা হয়, সেটিকে সায়াটিকা বলে।


কারণ

সায়াটিক নার্ভের সংকোচনের কারণে সায়াটিকা হতে পারে। এই সংকোচন ঘটে, যখন আপনার মেরুদণ্ডে ডিস্ক হার্নিয়েশন হয়ে থাকে ও মেরুদণ্ডে হাড়ের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে। সায়াটিকা স্নায়ু টিউমার মাধ্যমে সংকুচিত হতে পারে বা ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ঝুঁকি

ব্যক্তির বয়স, ওজন, পেশা, জীবনযাত্রার অভ্যাস, যেমন দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস সায়াটিকার ঝুঁকি তৈরি করে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডিস্ক হার্নিয়েশন ও হাড়ের স্পারের সমস্যা হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে শরীরের অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের পরিবর্তন নিয়ে আসে। যারা ভারী ভার বহন করেন বা ড্রাইভিংয়ে বেশি সময় দেন, তাঁরাও মেরুদণ্ডের পরিবর্তন অনুভব করতে পারেন। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি (স্নায়ু ক্ষতি) করে। সায়াটিকার জটিলতা হলো স্নায়ুর স্থায়ী ক্ষতি, আক্রান্ত পায়ে অনুভূতি হ্রাস এবং অন্ত্র বা মূত্রাশয়ের কার্যকারিতা হ্রাস ইত্যাদি।

চিকিৎসা
সায়াটিকা সমস্যায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অতি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাপদ্ধতি। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা ডিস্ক প্রলাপ্সের সমস্যার সমাধান করা যায়। পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ।

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে এই সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। এ ছাড়া এমন সমস্যা দেখা দিলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়, যেমন সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো ভারী কাজ করা যাবে না। ভারী ওজন তোলা যাবে না। শক্ত বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। ভ্রমণ বা হাঁটাচলার সময় লাম্বার করসেট বেল্ট ব্যবহার করা। পাশাপাশি চিকিৎসকের নির্দেশমতো ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল