চশমা ছাড়াই দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির ড্রপ বাজারে আসছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক
  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:১৪

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষার পর ভারতে একটি নতুন চোখের ড্রপ অনুমোদিত হয়েছে। এই ড্রপটি চশমা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কমাবে বলে দাবি করছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। খবর দ্য ইকোনোমিক টাইমসের।
মুম্বাইয়ের এন্টোড ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রেসভু (PresVu) নামে একটি আই ড্রপ বাজারে আনছে। এই ড্রপটি পাইলোকারপাইন ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে, যা চোখের মণির আকার কমিয়ে প্রেসবায়োপিয়া’র চিকিৎসা করে এবং কাছের বস্তু দেখতে সহায়তা করে।
প্রেসবায়োপিয়া হলো একটি বয়সজনিত চোখের সমস্যা যা কাছে বস্তু দেখার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
ইকোনোমিক টাইমসের এক সাক্ষাত্কারে, এন্টোড ফার্মাসিউটিক্যালসের সিইও নিখিল কে মাসুরকার বলেছেন, 'এই ঔষধের একটি ফোঁটা মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে কাজ শুরু করে এবং এর প্রভাব পরবর্তী ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। যদি দ্বিতীয় ড্রপটি প্রথম ড্রপের তিন থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে দেওয়া হয়, তবে প্রভাব আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।' 
তিনি আরও জানান, 'এখন পর্যন্ত চশমা, কন্টাক্ট লেন্স বা অস্ত্রোপচার ছাড়া প্রেসবায়োপিয়া চিকিৎসার জন্য কোনও ঔষধ-ভিত্তিক সমাধান ছিল না।'
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে, এই প্রেসক্রিপশন-ভিত্তিক ড্রপগুলি ফার্মেসিগুলিতে পাওয়া যাবে এবং এর দাম হবে ৩৫০ রুপি। ৪০ থেকে ৫৫ বছর বয়সী লোকেদের জন্য হালকা থেকে মাঝারি প্রেসবায়োপিয়ার চিকিৎসার জন্য এই ঔষধটি প্রেস্ক্রাইব করা হবে।
মাসুরকার দাবি করেছেন, এটি ভারতে প্রথমবার এসেছে এবং ভারতীয়দের চোখের জন্য বিশেষভাবে কাস্টমাইজ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, 'বিদেশে এমন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়, কিন্তু সেগুলো ভারতীয়দের চোখের ওপর পরীক্ষা করা হয়নি। তাই আমরা ফর্মুলেশনে বেশ কিছু পরিবর্তন করেছি।'
এই ঔষধটি শুধুমাত্র বৈধ মেডিকেল প্র্যাকটিশনারদের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। কোম্পানিটি চিকিৎসকদের নতুন পণ্যের ব্যবহার সম্পর্কে জানাতে এবং শিক্ষিত করতে তাদের মাঠকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে।
মাসুরকার ব্যাখ্যা করেছেন যে, কোম্পানিটি ২০২২ সালের শুরুতে ড্রপটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল এবং তৃতীয় ধাপের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনার জন্য বলা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ভারতের ২৭৪ জন রোগীর ওপর এই ড্রপ পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮২ শতাংশের চোখে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
অবশিষ্ট রোগীরা চোখের জ্বালা, লালভাব, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া এবং মাথাব্যথার মতো ক্ষণস্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছে। তবে মাসুরকারের দাবি, 'এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি ক্ষণস্থায়ী ছিল এবং কয়েকদিনের মধ্যে দূর হয়ে গেছে। রোগীরা একবার মানিয়ে নিলে সমস্যা হবে না। ট্রায়াল থেকে কোনো রোগীকে বাদ দেওয়া হয়নি।'