বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক যোগাযোগ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে বিমসটেকের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। ভারতের বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বিমসটেক বন্দর সম্মেলনে এই অঙ্গীকার করেন রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত বিসমটেক সচিবালয়।
ভারতের বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশাখাপত্তনম বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নেভিগেটিং দ্য ফিউচার: ব্লু ইকোনমি, ইনোভেশন অ্যান্ড সাসটেইনেবল পার্টনারশিপস’।
সম্মেলনে বিমসটেকের সাতটি সদস্য দেশ- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দল, সামুদ্রিক বিশেষজ্ঞ, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বেসরকারি খাতের নেতারা অংশ নেন। তারা বিমসটেক অঞ্চলের বন্দরগুলোর মধ্যে যোগাযোগ জোরদার, বন্দর অবকাঠামোতে বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ এবং টেকসই ও প্রযুক্তিনির্ভর বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ভারতের নেবারহুড ফার্স্ট নীতি এই অঞ্চলে সামুদ্রিক খাতে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।
ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, বিমসটেকভুক্ত দেশগুলো বিভিন্ন খাতে বিশ্বশক্তি, যা এই দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে আঞ্চলিক সহযোগিতার বিশাল সুযোগ তৈরি করছে।
সম্মেলনে আলোচনার মূল বিষয় ছিল বেসরকারি বিনিয়োগ ও পিপিপি বৃদ্ধি, বন্দর সংযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠন, সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি বাস্তবায়ন, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ক্রুজ ট্যুরিজম উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ দক্ষতা বৃদ্ধি।
সমাপনী আলোচনায় টেকসই বন্দর ব্যবস্থাপনা, গ্রিন শিপিং করিডোর, আঞ্চলিক একক উইন্ডো প্রক্রিয়া, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়ন এবং ল্যান্ড পোর্টস সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব গুরুত্ব পায়।
বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্র মণি পান্ডে বলেন, সামুদ্রিক সহযোগিতা শক্তিশালী করা একটি সংযুক্ত, টেকসই ও সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগর অঞ্চল গড়তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্মেলন সদস্য দেশগুলোর কৌশলগত অগ্রাধিকার সমন্বয় সাধনের সুযোগ তৈরি করেছে।
ভারতের প্রস্তাবিত বিমসটেক সেন্টার অব এক্সিলেন্স অন সাসটেইনেবল মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট আঞ্চলিক গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং গ্রিন লজিস্টিকস উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপকে সদস্য রাষ্ট্রগুলো স্বাগত জানিয়েছে।
বিমসটেক বর্তমানে কৃষি, পরিবেশ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ সাতটি খাতে এবং ব্লু ইকোনমি, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ আটটি উপখাত নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।