ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের আরবি ও ইসলামি জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৬ জুলাই ২০২৫, ২০:২৮

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দাদের জন্য আরবি ভাষা ও ইসলামিক জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মূলত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গোয়েন্দা ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গোয়েন্দা শাখা ‘আমান’র সব সৈনিক ও কর্মকর্তার জন্য আরবি ভাষা এবং ইসলামিক স্টাডিজ প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইডিএফ-এর বরাত দিয়ে জিউইশ নিউজ সিন্ডিকেট (জেএনএস) জানিয়েছে, এই নতুন প্রশিক্ষণ গোয়েন্দা কর্মীদের বিশ্লেষণাত্মক সক্ষমতা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (আমান) শতভাগ কর্মীকে ইসলামিক স্টাডিজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং তাদের ৫০ শতাংশ আরবি ভাষার প্রশিক্ষণ নেবেন। শুধু মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দাই নয়, যেসব সদস্য সাধারণত প্রযুক্তিগত বা লজিস্টিক দায়িত্বে থাকেন, তাদেরও এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে।
আমানের প্রধান মেজর জেনারেল শ্লোমি বিন্ডার এই পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই কর্মসূচিতে হুথি ও ইরাকি উপভাষায় বিশেষ প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেওয়া হবে। কারণ গোয়েন্দারা হুথি যোগাযোগ ডিসাইফার (সাংকেতিক বার্তা পাঠোদ্ধার) করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইয়েমেন ও আরবের অন্যান্য অংশে সামাজিকভাবে প্রচলিত চর্বনযোগ্য হালকা মাদকদ্রব্য ‘কাত’ ব্যবহারের কারণে কথার স্পষ্টতা অনেকটাই নষ্ট হয়। এই নতুন নিয়মের বিষয়ে আমানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সংস্কৃতি, ভাষা এবং ইসলামের বিষয়ে যথেষ্ট ভালো ছিলাম না। এই ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমরা আমাদের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও সৈনিকদের গ্রামে বেড়ে ওঠা আরব বাচ্চাদের মতো বানাব না, তবে ভাষা ও সংস্কৃতি অধ্যয়নের মাধ্যমে আমরা তাদের মধ্যে সন্দেহ এবং গভীর পর্যবেক্ষণ তৈরি করতে পারব।’
আর্মি রেডিওর সামরিক সংবাদদাতা ডোরন কাদোশ বলেছেন যে, আরবি ও ইসলামিক শিক্ষার জন্য একটি নতুন বিভাগ খোলা হবে। এ ছাড়া, আইডিএফ ইসরায়েলি মাধ্যমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে আরবি ও মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়নের জন্য নিবেদিত বিভাগ ‘তেলেম’ পুনরায় খোলার পরিকল্পনা করেছে। আগে বাজেট সংকটের কারণে এই বিভাগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে দেশে আরবি অধ্যয়নরত কর্মীর সংখ্যায় তীব্র হ্রাস দেখা গিয়েছিল।
এই নতুন প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ২০২৫ সালের মধ্যেই গোয়েন্দা ইউনিটের সব সদস্যদের ওপর কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।