অপারেশন সামিট অব ফায়ার

হামাস নেতাদের বৈঠকে হামলা চালাতে মাসব্যাপী প্রস্তুতি নিয়েছিল ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:৩১

দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকে ইসরাইলি বিমান হামলার আগে কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিল তেলআবিব। মঙ্গলবারের এ হামলায় কাতারের রাজধানী জুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। 
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বুধবার এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘অপারেশন সামিট অব ফায়ার’ নামের এ অভিযানে ১০টিরও বেশি ইসরাইলি যুদ্ধবিমান কাতারের আকাশসীমায় প্রবেশ না করেই ১০টিরও বেশি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনা ও পরবর্তী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী বলে অভিযোগ থাকা হামাসের শীর্ষ নেতাদের দোহায় বৈঠকের খবর পেয়েই এই হামলা চালানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠক শেষ করার কিছু পরই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এর আগে স্থানীয় সময় দুপুরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ অভিযানের অনুমোদন দেন।
কাতারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে আরব সংবাদমাধ্যম আল-আরাবি আল-জাদিদ জানিয়েছে, হামাসের বৈঠক শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পরই ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। 
আর লেবাননের দৈনিক আল-আখবার এর তথ্যানুযায়ী, গত দুই সপ্তাহ ধরে মিসর হামাস নেতাদের সতর্ক করছিল বিদেশে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি সম্পর্কে, বিশেষ করে লেবানন ও তুরস্কে। 
তবে কাতারের ভেতরে, প্রকাশ্যে এমন হামলা চালানো দোহা ও কায়রোর জন্য ছিল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত।
এদিকে, মার্কিন কর্মকর্তারা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–কে জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মিনিট আগে ইসরাইল শুধু জানিয়েছিল যে একটি হামলা আসছে, তবে লক্ষ্যবস্তু জানায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে হোয়াইট হাউসকে সতর্ক করে।প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি বিশেষ মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফকে কাতারকে সতর্ক করতে নির্দেশ দেন, তবে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
মঙ্গলবার রাতে সিএনএনকে ট্রাম্প বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতি নিয়ে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট নই। এটা ভালো কিছু নয়। আমরা অবশ্যই জিম্মিদের ফেরত চাই, তবে যেভাবে ঘটনাটা ঘটলো, তাতে আমরা খুশি নই।’ তিনি জানান, এ নিয়ে তিনি বুধবার পূর্ণাঙ্গ বিবৃতি দেবেন।
হামলার পর ইসরাইল প্রকাশ্যে এর দায় স্বীকার করে, যা সিরিয়া, লেবানন বা ইরানের আগের অনেক হামলার মতো গোপন রাখা হয়নি।
জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হামাসকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ করা হলে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হতে পারে, আর আমরা অঞ্চলে শান্তি সম্প্রসারিত করতে পারব।’
অন্যদিকে, কাতার এ হামলাকে ‘অপরাধমূলক আগ্রাসন’ ও ‘আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসেবে নিন্দা জানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হামাস-ইসরাইল মধ্যস্থতা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এ সপ্তাহের শেষ দিকে দোহায় আরব-ইসলামী শীর্ষ সম্মেলন ডাকার পরিকল্পনাও করছে কাতার।
এদিকে আলজেরিয়ার আবেদনের পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।