সমুদ্র পথে প্রথম গাজায় গেল ত্রাণবাহী জাহাজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৩:০২

মানবিক সহায়তা নিয়ে সমুদ্র পথে প্রথমবার গাজায় পৌঁছেছে একটি জাহাজ। সাইপ্রাস থেকে আসা জাহাজটি শুক্রবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় সময় রাতে গাজায় পৌঁছায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গাজায় ইসরায়েল হামলা চালানোর পর আকাশ এবং সীমান্ত পথে ত্রাণ পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনে সমুদ্র পথে ত্রাণ পাঠানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই অংশ হিসেবে গেল মঙ্গলবার সাগরপথে প্রায় ২০০ টন খাবার নিয়ে সাইপ্রাসের লারনাকা বন্দর ছেড়ে গাজার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেছিল স্প্যানিস জাহাজ ওপেন আর্মস।
ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রারাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এ খাদ্য সরবরাহ করেছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। জাহাজে চাল, ময়দা, লেবু, টিনজাত শাকসবজি এবং টিনজাত প্রোটিন পাঠানো হয়েছে। যদিও গাজায় কোনো বন্দর নেই। এজন্য অস্থায়ীভাবে ডব্লিউসিকে দল একটি জেটি বানিয়েছে। যার মাধ্যমে জাহাজ থেকে খাদ্য নামানো হচ্ছে। তবে এসব খাবার কীভাবে বিতরণ করা হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। 
ডব্লিউসিকে’র প্রতিষ্ঠাতা সেফ জোস অ্যান্ড্রেস এক্স পোস্টে বলেন, জাহাজের খাদ্যগুলো পরিবহনে ১২টি ট্রাকে লোড করা হবে। আগামীতে আরও খাদ্য পাঠানো হবে। 
নতুন সামুদ্রিক পথ চালু হলে গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষের সংকট কিছুটা কমতে পারে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। যদিও সাহায্য সংস্থাগুলো বলেছে, সমুদ্রপথ ও বিমান থেকে ফেলে এই অঞ্চলের বিশাল চাহিদা মেটানো যথেষ্ট হবে না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান এবং স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এ ছাড়া হামলায় ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
রাফাহ নগরীতে আশ্রয় নিয়ে আছে আনুমানিক ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি। তারা ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য স্থান থেকে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। 
এদিকে আন্তর্জাতিক আহ্বানকে উপেক্ষা করে রাফাহতে স্থল হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার (১৫ মার্চ) তিনি এ অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য স্ট্রেট টাইমস।
রাফাতে স্থল অভিযান ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে বলেছিলেন, রাফাহ আক্রমণ ‘রেড লাইন’ অতিক্রমকে প্রতিনিধিত্ব করবে।
হামাসের নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। প্রস্তাবের শর্তগুলোকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তবে, খুব শিগগিরই যুদ্ধ বিরতিতে দুই পক্ষ পৌঁছাতে পারবে বলে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র।