বায়ুদূষণের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা। মারাত্মক বায়ুদূষণে দম বন্ধ অবস্থা শিশু থেকে বৃদ্ধ সবারই। এই দূষণে হার্ট ও ফুসফুসের বেহাল দশা হচ্ছে সবারই। বায়ুদূষণ শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে।
যার মধ্যে ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ অন্যতম। এছাড়া কিডনির ওপরেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে বায়ুদূষণ। এছাড়া রক্তচাপ, প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষতি, চোখ ও ফুসফুসের সমস্যা, ক্যানসার ও হৃদরোগেরও অন্যতম কারণ হতে পারে বায় দূষণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের কারণে বছরে ৪২ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী যেসব অসংক্রামক রোগে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে তার অধিকাংশই বায়ু দূষণজনিত।
সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, বায়ুদূষণে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু কমেছে ৭ বছর। আর রাজধানীবাসীর গড় আয়ু কমছে ৮ বছর করে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বায়ুদূষণ শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, ঠিক তেমনই মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে। খুব কম মানুষই জানেন যে, দূষণ আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যও নষ্ট করতে পারে।
বায়ুদূষণ কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে?
চিকিৎসকদের মতে, বায়ুদূষণ মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যা প্রায়শই অনেক মনস্তাত্ত্বিক ও জ্ঞানীয় সমস্যার কারণ হতে পারে।
বায়ুদূষণের ক্রমাগত সংস্পর্শে থাকার ফলে একজন ব্যক্তির মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণগুলো দেখা দেয়। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এই সমস্যা আরও বাড়ে। একই সঙ্গে যে কোনো কাজে মনোযোগ দিতে প্রতিনিয়ত অলসতা ও অসুবিধা বোধ হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতাসে উপস্থিত দূষিত কণা আমদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। যার ফলে মনোযোগ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে।
শুধু তাই নয়, দূষণ স্বাভাবিক ঘুমের চক্রকেও ব্যাহত করতে পারে। ফলে অনিদ্রা বা অনিয়মিত ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। আর এসব সমস্যা থেকেই ক্লান্তি ও মানসিক অবসাদ বাড়াতে পারে।
বায়ুদূষণের প্রভাব কমাতে মানসিক স্বাস্থ্যের কীভাবে যত্ন নেবেন?
এই প্রভাবগুলো কমাতে আপনি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। এজন্য শরীরচর্চা ও মেডিটেশন করুন নিয়মিত। পাশাপাশি একটি সুষম খাদ্য বজায় রাখতে পারেন।
এছাড়া ইনডোর এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন। বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই একটি মাস্ক ব্যবহার করুন। বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলায় সচেতনতা ও সক্রিয় ব্যবস্থাও জরুরি।