শীতকালে ত্বকের পাশাপাশি দাঁতের যত্ন নেওয়াও জরুরি। এ সময় দাঁতের পুরোনো রোগগুলো বেড়ে যায়। ঠান্ডা পানি ব্যবহার ও পানের কারণে দাঁতে ব্যথা, শিরশিরানি হওয়া, মাড়ি ফুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে গরম কিংবা ঠান্ডা পানি, এমনকি বাতাসের সংস্পর্শেও দাঁতের ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।
এর প্রধান কারণ সেলুলোজ জাতীয় আঁশযুক্ত খাবার খুব সহজে দাঁতের ফাঁকে ও মাড়িতে আটকে যায়। এই খাবার দীর্ঘসময় আটকে থাকার ফলে মাড়ি ও দাঁত দুটোই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এতে দাঁতে হালকা বা তীব্র ব্যথা হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে শীতে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই শীতে দাঁতের যত্ন নেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে কী করবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. নিয়মিত দু’বেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ও সকালে নাশতা খাওয়ার পর।
২. সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশ সামনে-পেছনে করে দাঁত মাজবেন না। এতে দাঁতের ক্ষয় হয়। দাঁত ব্রাশ করতে হবে আস্তে আস্তে ওপরে-নিচে করে।
৩. নিচের পাটির দাঁতের জন্য ব্রাশ দাঁতের গোড়ার দিক থেকে ওপরের দিকে নিতে হবে। ঠিক তেমনই ওপরের পাটির জন্য দাঁতের গোড়ার দিক থেকে নিচের দিকে নিতে হবে।
৪. দেড় থেকে দুই মিনিট দাঁত ব্রাশই যথেষ্ট। এর বেশি করার দরকার পড়ে না। করলে দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
৫. দুপুরে খাওয়ার পর ভালো করে কুলকুচি করতে হবে।
৬. প্রতি দু’মাস অন্তর ব্রাশ ও প্রতি ৩ মাস অন্তর টুথপেস্ট পরিবর্তন করতে হবে।
সমস্যা হলে করণীয়-
১. দাঁতের ব্যথা সাময়িকভাবে কমানো কোনো চিকিৎসা নয়। সব সময় দাঁতের যত্নের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
২. মাড়ি থেকে যদি ব্রাশ করার সময় বা অন্য সময়ও রক্ত পড়ে তাহলে দাঁতের স্কেলিং দরকার।
৩. খাবার পর কিংবা অন্য যে কোনো সময় যদি দাঁত ব্যথা বা শিরশির করে তাহলে দেরি না করে ডেন্টিস্টের সঙ্গে দেখা করুন।
৪. সেনসিটিভিটি কমানোর জন্য ফ্লোরাইড জাতীয় ভালো পেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
৫. অনেক সময় ব্রাশ ব্যবহারে অবহেলা ও অতিরিক্ত ব্রাশের কারণে দাঁত ক্ষয়ে যায়। এক্ষেত্রে দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া রোধে ফিলিং ও কোটিং করতে হয়। এতে ক্ষয় পূরণ হয়। বেশি ক্ষয় হয়ে ব্যথা শুরু হলে রুট ক্যানেল চিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে।
৬. বছরে অন্তত দু’বার ডেন্টিস্টের কাছে দাঁত দেখানো উচিত। এতে আপনার দাঁতে কী সমস্যা হয়েছে সেই অনুযায়ী তিনি সমাধান দেবেন।
যা পরিহার করতে হবে-
১. দাঁত ব্যথা করলে গরম সেঁক দেওয়া উচিত নয়। বরফ দিতে হবে। তবে লবণ গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে।
২. দাঁতের পোকা বলে কিছু নেই। তাই ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করতে হবে।
৩. দাঁত দিয়ে নখ কাটা উচিত নয়। এতে দাঁতের ক্ষয় হয়।
৪. দাঁত দিয়ে কোল্ড ড্রিংস জাতীয় বোতলের মুখ খোলা উচিত নয়।
৫. কোমলপানীয়, পান, নেশা জাতীয় দ্রব্য যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে।