প্রস্রাব সাধারণত গন্ধহীন। তবে বিভিন্ন কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে প্রস্রাব। দৈনন্দিন ডায়েট, ভিটামিন, ওষুধ ও হাইড্রেশনের উপর নির্ভর করে প্রস্রাবের রং ও গন্ধে পরিবর্তন ঘটতে পারে। দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব স্বাস্থ্যের তর্কতা চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। তাই প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ
আপনি যদি আপনার প্রস্রাবে অ্যামোনিয়ার একটি ইঙ্গিত সনাক্ত করেন তাহলে বুঝবেন আপনি মূত্রনালির সংক্রমণে (ইউটিআই) ভুগছেন। ইউটিআই এর লক্ষণ হিসেবে প্রস্রাকের রং বদলে ঘোলাটে হয় আবার কিছুটা রক্তাক্তও হতে পারে।
একই সঙ্গে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি প্রস্রাবের চাপও বাড়ে। এর সঙ্গে জ্বর ও মানসিক বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। এছাড়া প্রস্রাবে অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ ডিহাইড্রেশন, নির্দিষ্ট খাবার ও ভিটামিনের কারণেও ঘটতে পারে। প্রস্রাবে অ্যামোনিয়ার গন্ধ আরও যেসব রোগের ইঙ্গিত দেয়-
>> কিডনিতে পাথর বা কিডনি রোগ
>> লিভারের রোগ
>> মেনোপজ
>> প্রোস্টেট সংক্রমণ
>> যৌনবাহিত রোগ যেমন- ক্ল্যামাইডিয়া।
ফল বা মিষ্টি গন্ধযুক্ত প্রস্রাব
চিনিযুক্ত বা ফলের সুগন্ধযুক্ত প্রস্রাব ডায়াবেটিস বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া (হাই ব্লাড সুগার) এর ইঙ্গিত দেয়। মিষ্টি গন্ধ হওয়ার কারণ হলো শরীরে গ্লুকোজ বা শর্করা বেড়ে যাওয়া।
জীবনযাত্রার ভুলেও হয় প্রসাব দুর্গন্ধ
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অভ্যাসের কারণেও প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হতে পারে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এই লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিছু খাবার
অ্যাসপারাগাস প্রস্রাবে সালফার গন্ধের সৃষ্টি করে। আসলে এটি খাওয়ার পর শরীর অ্যাসপারাগাসের একটি অ্যাসিডকে সালফারযুক্ত যৌগগুলোতে রূপান্তরিত করে, ফলে এই তীব্র ফলাফল তৈরি হয়। এছাড়া ব্রাসেলস স্প্রাউট, মাছ, জিরা, পেঁয়াজ এমনকি রসুনও প্রস্রাবে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে।
কফি পান করা
জানলে অবাক হবেন, কফি পান করার ফলেই প্রসাবে কটূ গন্ধ হতে পারে। তাই অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ এড়িয়ে চলুন। আবার অ্যালকোহলও প্রস্রাবে গন্ধ তৈরি করতে পারে।
আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রস্রাব খুব কম গন্ধ বহন করে। কারণ প্রস্রাবের প্রায় ৯৫ শতাংশই পানি। অবশিষ্ট পরিমাণে বেশিরভাগই বর্জ্য পদার্থ থাকে যেমন- ক্যালসিয়াম, নাইট্রোজেন, পটাসিয়ামসহ বিভিন্ন উপাদান। যা কিডনি দ্বারা ফিল্টার করা হয়।
ডিহাইড্রেশন
যারা পানিশূন্যতায় ভুগছেন তাদের প্রস্রাবেও দুর্গন্ধ হওয়া স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে প্রস্রাবের সঙ্গে বর্জ্য পদার্থ বেশি থাকে, ফলে তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হয়। তাই দৈনিক ২-৩ লিটার পানি পান করা আবশ্যক।
সূত্র: ক্লিভন্যান্ড ক্লিনিক হেলথ এসেনশিয়াল