সোশ্যাল মিডিয়ার ফিড মানেই এখন ইমোজি। কমেন্ট, মেসেজ কিংবা যোগাযোগের সবক্ষেত্রেই ইমোজি। আমরা ইমোজি এখন বাস্তব জীবনেও দেখি। সেটাই বা কিভাবে? আসুন ভেবে দেখি:
ইমোজি এলো কিভাবে
আমাদের আবেগের প্রতিচ্ছবি এই ইমোজিতে। নতুন ব্যক্তিত্ব আর রসবোধ তৈরিতে ইমোজি আসে। ইমোজি প্রথম দৃশ্যপটে আসে ১৯৯০ দশকের শেষভাগে। জাপানের ইন্টারফেস ডিজাইনার শিগেতাকা কুরিতার মাধ্যমেই এর প্রচলন। তার মাধ্যমেই বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয় ইমোজি ব্যবহারের ট্রেন্ড। বয়স, সংস্কৃতি ও ভাষা নির্বিশেষে বিশ্ববাসীর সর্বজনীন ভাষায় পরিণত হয় ইমোজি। মানুষ যে আবেগই প্রকাশ করার চেষ্টা করুক না কেন, তার সব আছে ইমোজির ভাণ্ডারে। ইমোজি দিয়ে সব আবেগই বোঝানো সম্ভব। শুধু তাই নয়, এটি যোগাযোগকে আরও দ্রুত করেছে এবং সব ধরনের মানুষের জন্য অনুভূতিকে করেছে বোধগম্যও।
ইমোজির রয়েছে নেতিবাচক দিকও
ইমোজি ব্যবহারের কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে ইমোজি ব্যবহার করে আমরা অনুভূতি প্রকাশ করছি। হালকা চালের ইমোজি ব্যবহার করতে গিয়ে হয়ত আমরা আবেগের প্রকৃত গভীরতা হারাচ্ছি। কারও সঙ্গে যোগাযোগের সময় চিন্তা-ভাবনা করে কিছু লেখার বদলে কয়েকটি ইমোজিতে ক্লিক করেই যোগাযোগ করা হচ্ছে। ফাস্টফুডের মতোই এমনটি আদৌ স্বাস্থ্যকর নয়।
পেশাজীবনে ইমোজি
পেশাজীবনের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ইমোজির মতো সহজে ব্যবহার্য সংকেতের বহুল ব্যবহারের কারণে অনেক মানুষেরই মানসিক উদ্দীপনা বা প্রতিক্রিয়া দেখানোর ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক ইমোজি দেখায় যে তারা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছেন। শিশুদের ক্ষেত্রে প্রভাবটি বেশ ব্যাপক। কারণ এ ধরনের যোগাযোগ পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণে তাদের লিখিত যোগাযোগ দক্ষতার সঠিক বিকাশ ঘটে না।
ইমোজির অর্থ যায় বদলে
অনেক সময় অনুবাদ করতে গেলে ইমোজির অর্থও বদলে যেতে পারে। থামস আপ দিলেই অনেকে মনে করেন যে তাকে অবহেলা করা হচ্ছে। আবার অনেক সময় তা ব্যঙ্গাত্মক। আবার স্মাইলি ইমোজিকে অনেকে ভাবেন সেন্টি। ইমোজির ব্যবহারকে এতটাই সাধারণীকরণ করা হয়েছে যে, আপনি যদি ইমোজি ব্যবহার না করেন তাহলে অনেক মানুষ, বিশেষ করে তরুণরা আপনাকে রোবট ভাববে।
তরুণ প্রজন্মের কাছে ইমোজি প্রকৃতির মতোই স্বাভাবিক, কিন্তু অন্য অনেকের কাছে এর অর্থ ধাঁধার মতো। অনেক সময় ইমোজির ব্যবহার গভীর ও অর্থপূর্ণ আবেগের বহিঃপ্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। কারণ আপনার হয়ে ইমোজিই সেই আবেগ প্রকাশ করে দিচ্ছে।