ডায়াবেটিস রোগী এখন প্রায় ঘরে ঘরেই। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র উপায় হলো হলো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা। এক্ষেত্রে খাওয়া-দাওয়া তো বটেই খেয়াল রাখা জরুরি ঘুম ও শরীরচর্চার দিকেও।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুঝে-শুনে খাওয়ার গুরত্ব যেমন, ঠিক তেমনই নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা অনুশীলনও জরুরি। তবে কর্মব্যস্ততার খাতিরে অনেকিই নিয়মিত জিমে যেতে পারেন না কিংবা সকাল-সন্ধ্যা হাঁটতে পারেন না।
এতে করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও যেমন বাড়ে, ঠিক তেমনই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তে শর্করার পরিমাণও বেড়ে যায়। তাই কাজের মাঝে চেয়ারে বসে হলেও ব্যয়াম করা জরুরি। সেক্ষেত্রে একটি ব্যায়াম আছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হতে পারে অনেক উপকারী।
চেয়ারে সোজা হয়ে বসে পায়ের পাতা মাটিতে রেখে শুধু গোড়ালি ওঠানো-নামানো, এর মাধ্যমে মিলবে শরীরচর্চার ফল। ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টন টেক্সাসের ২০২২ সালের এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, এই ব্যায়াম করেই ৫২ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর ওষুধের চেয়ে ভালো কাজ করেছে।
পায়ের পেছনের অংশে থাকে সেলশিয়াস পেশি। এটি সঠিকভাবে সক্রিয় হলে অক্সিডেটিভ মেটাবলিজমকে কয়েক মিনিটের জন্য উচ্চ মাত্রায় বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই পেশি নড়াচড়া করলে রক্তে শর্করার মাত্রা একটি বড় শতাংশ (অর্ধেক দ্বারা) কমে।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই পেশি কখনো ক্লান্তি ভোগ করে না। এমনকি যদি আপনি এটি দীর্ঘক্ষণ নাড়াচাড়াও করেন। আপনি চেয়ারে বসে অফিসে কাজের ফাঁকে কিংবা টিভি দেখার সময়ও এই ব্যায়াম করতে পারেন।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এই ব্যায়াম হাঁটা, দৌড়ানো, জিমিং ইত্যাদির চেয়ে বেশি কার্যকর। শুধু পায়ের গোড়ালি ওঠানো-নামানোর মাধ্যমেই আপনার শরীরের বাকি অংশ সক্রিয় হয়ে উঠবে।
সম্প্রতি ভারতীয় আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ডা. দিক্ষা ভাবসার সাভালিয়া (বিএএমএস) তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এই ব্যায়ামের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন ব্যায়ামটির গুরুত্ব সম্পর্কে।
তিনি জানান, এই অনুশীলন দৈনিক ৫-৭ মিনিট করতে পারেন ৩ সেট করে। প্রতিদিন সেট বাড়ানোর চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে ১০ জন্য এই ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। যদি পারেন তাহলে ৩০ মিনিটও করতে পারেন ধীরে ধীরে।
এই ব্যায়াম আপনার শক্তির মাত্রা উন্নত করতে, রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে ওইনসুলিন প্রতিরোধের উন্নতি করতে সাহায্য করে। তাই এটি প্রি-ডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিসসহ পিসিএসএ’র জন্যও সহায়ক।