শেষ বৈঠকে দরুদ পড়ার আগে ইমাম সালাম ফেরালে কী করবেন?

ধর্ম ডেস্ক
  ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৫৪

নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব। মুক্তাদির জন্য ইমামের অনুসরণ করাও ওয়াজিব। দরুদ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়া সুন্নত। শেষ বৈঠকে ইমাম যদি মুক্তাদির তাশাহুদ পড়ার আগে সালাম ফিরিয়ে ফেলেন, তাহলে মুক্তাদি তাশাহহুদ না পড়ে সালাম ফেরাবেন না, বরং তাশাহহুদ শেষ করে তারপর সালাম ফেরাবেন যেহেতু ইমামের অনুসরণের মতো শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়াও ওয়াজিব।

কিন্তু মুক্তাদি দরুদ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে শেষ করার আগে ইমাম সালাম ফেরালে মুক্তাদি দরুদ বা দোয়ায়ে মাসুরা শেষ করার জন্য অপেক্ষা করবেন না, বরং ইমামকে অনুসরণ করে সালাম ফেরাবেন। যেহেতু ইমামের অনুসরণ করা ওয়াজিব, দরুদ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়া সুন্নত, তাই সুন্নত ছেড়ে ওয়াজিব পালন করতে হবে অর্থাৎ ইমামের অনুসরণ করতে হবে।

নামাজের শেষ বৈঠকে দরুদ পড়া যেহেতু ওয়াজিব নয়, তাই একা বা জামাতে নামাজ আদায়ের সময় কেউ যদি নামাজের শেষ বৈঠকে ইচ্ছাকৃত দরুদ পাঠ না করে, তাহলেও তার নামাজ হয়ে যাবে, পুনরায় পড়তে হবে না। তবে মনে রাখতে হবে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া অত্যন্ত অপছন্দনীয় কাজ।

নবিজি (সা.) নামাজের শেষ বৈঠকে দরুদ পাঠ করতে বলতেন। কেউ নামাজে দরুদ পাঠ না করলে সংশোধনও করে দিতেন। ফাজালাহ ইবনে ওবাইদ (রা.) বলেন, এক নামাজরত ব্যক্তিকে নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দরুদ না পড়েই দোয়া করতে শুনলেন। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এই ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অন্য কাউকে বললেন, তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও তার গুণগান করে, তারপর আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওপর দরুদ পাঠ করে, তারপর তার মনের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দোয়া করে। (সুনানে তিরমিজি)

নামাজে দরুদ কীভাবে পাঠ করতে হবে তাও আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শিখিয়েছেন। আবু মাসউদ উকবা ইবনে আমের আনসারি (রা.) বলেন, একদিন এক ব্যক্তি এসে রাসুলের (সা.) সামনে বসলেন। আমরা তার কাছেই ছিলাম। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা নামাজে সালাত পাঠ করবো কীভাবে? নবিজি কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। তারপর বললেন, তোমরা এভাবে সালাত পাঠ করো,

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম-মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিম ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম-মাজিদ।

অর্থ: হে আল্লাহ! উম্মি নবি মুহাম্মাদের ওপর এবং মুহাম্মাদের পরিবারের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহিমের ওপর এবং ইবরাহিমের পরিবারের ওপর। উম্মি নবি মুহাম্মাদ ও তার পরিবারকে বরকত দান করুন, যেমন ইবরাহিম ও তার পরিবারকে বরকত দান করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, মহিমান্বিত। (সুনানে দারাকুতনি)