সুবহে সাদিকের আগে ফজরের সুন্নত পড়া যাবে কি?

ধর্ম ডেস্ক
  ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:০৮

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ নির্ধারিত ৫ সময়ে আদায় করা ফরজ। ওয়াক্ত হওয়ার আগে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করে ফেললে ওয়াক্ত হওয়ার পর তা আবার আদায় করা ফরজ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, নিশ্চয় সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। (সুরা নিসা: ১০৩)

ফরজের মতো পাঁচ ওয়াক্তের সুন্নত নামাজও নির্দিষ্ট সময়ে আদায় করা জরুরি। ওয়াক্ত হওয়ার আগে কোনো ওয়াক্তের সুন্নত আদায় করলে তা সাধারণ নফল গণ্য হয়। সুতরাং ফজরের সুন্নত ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পর অর্থাৎ সুবহে সাদিকের পর আদায় করতে হবে। সুবহে সাদিকের আগে আদায় করলে তা তাহাজ্জুদ বা নফল গণ্য হবে। সুবহে সাদিকের পর ফজরের সুন্নত পড়ে নিতে হবে।

তবে কোনো ওয়াক্তের সুন্নত আদায়ের জন্য ওই ওয়াক্তের আজান হওয়া জরুরি নয়। নারী ও মুসাফিরসহ যারা কোনো ওজরের কারণে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যেতে পারেন না, তারা ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পর ওই ওয়াক্তের সুন্নত ও ফরজ নামাজ আদায় করতে পারেন। যারা মসজিদে নামাজ আদায় করেন তারাও আজানের আগে ওই ওয়াক্তের সুন্নত নামাজ পড়তে পারেন। ওয়াক্ত শুরু হয়ে যাওয়ার পর মসজিদে আজান দেওয়া না হলেও সুন্নত নামাজ আদায় করা যায়।

প্রতিদিন পাঁচটি ওয়াক্তে ১৭ রাকাত ফরজ নামাজের পাশাপাশি ১২ রাকাত সুন্নত নামাজ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিয়মিত এ নামাজগুলো আদায় করতেন। এগুলোকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি দিন ও রাতে বারো রাকাত নামাজ আদায় করবে, তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সহিহ মুসলিম: ৭২৮)

সুনানে তিরমিজির বর্ণনায় বিস্তারিত উল্লিখিত রয়েছে ওই ১২ রাকাত নামাজ কখন কীভাবে আদায় করতে হবে। নবিজি (সা.) বলেছেন, চার রাকাত জোহরের ফরজের আগে, দুই রাকাত জোহরের ফজরের পরে, দুই রাকাত মাগরিবের ফজরের পরে, দুই রাকাত ইশার ফরজের পরে আর দুই রাকাত ফজরের ফরজের আগে আদায় করতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪১৫)

এ বারো রাকাতের মধ্যে ফজরের আগের দুই রাকাত নামাজের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব আলাদাভাবে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, যদি সৈন্যবাহিনী তোমাদের তাড়া করে, তবুও ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না। (মুসনাদে আহমদ: ৯২৫৩)