ওজুতে হাত ও পায়ের আঙ্গুল খিলাল করা সুন্নত অজুর সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিপূর্ণরূপে ধোয়া ফরজ। পায়ের গোড়ালি, হাতের কুনুই, হাত ও পায়ের আঙুলসহ যে সব জায়গা শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তা ভালো করে ধুতে হবে। চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয় এমন কিছু লেগে থাকলে তা সরাতে হবে। কারণ আল্লাহ অজুর জন্য যে অঙ্গগুলো ধোয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তা পরিপূর্ণরূপে ধোয়া ছাড়া অজু শুদ্ধ হয় না।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক সফরে রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে রয়ে গিয়েছিলেন। আমরা আসরের নামাজ শুরু করতে দেরি করে ফেলেছিলাম। তিনি যখন আমাদের কাছে পৌঁছলেন, আমরা অজু করছিলাম এবং তাড়াহুড়ার কারণে আমাদের পা মাসেহ করার মত হালকাভাবে ধুয়ে নিচ্ছিলাম। তখন রাসুল (সা.) উচ্চৈস্বরে বললেন,
وَيْلٌ لِلْأَعْقَابِ من النَّار أَسْبغُوا الْوضُوء
সর্বনাশ! (শুকনো) গোড়ালির লোকেরা জাহান্নামে যাবে, তোমরা পূর্ণরূপে অজু কর। (সহিহ মুসলিম)
ওজুতে হাত ও পায়ের আঙ্গুল খিলাল করা অর্থাৎ এক হাতের অন্য হাতের আঙ্গুলের ভেতরে এবং হাতের আঙ্গুল পায়ের আঙ্গুলের ভেতরে ঢুকিয়ে ভালোভাবে ধৌত করা সুন্নত। লাকিত ইবনে সাবিরাহ (রা.) তার বাবা থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
إِذَا تَوَضَّأْتَ فَخَلِّلِ الْأَصَابِعَ.
ওজু করার সময় আঙ্গুলসমূহ খিলাল করবে। (সুনানে তিরমিজি: ৩৮)
আরেকটি বর্ণনায় লাকিত ইবনে সাবিরাহ (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললাম, আমাকে অজু সম্পর্কে বলুন। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الْأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا
অজুর অঙ্গগুলো পরিপূর্ণভাবে ধুবে। আঙ্গুলগুলোর মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে খিলাল করবে এবং উত্তমরূপে নাকে পানি পৌঁছাবে, যদি রোজাদার না হও। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪২)
বিশেষত পায়ের আঙ্গুল মিলে মিলে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে দুই আঙ্গুলের ফাঁকে পানি না পৌঁছার আশঙ্কা বেশি থাকে তাই পায়ের আঙ্গুল গুরুত্ব দিয়ে খিলাল করতে হবে। মুসতাওরিদ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওজুর সময় তার কনিষ্ঠা আঙ্গুল দিয়ে পায়ের আঙ্গুল খিলাল করতে দেখেছি। (মুসনাদে আহমদ: ১৮০১০)
খিলাল না করলে যদি হাত বা পায়ের আঙুলের মাঝের অংশ শুকনো থেকে যাওয়ার প্রবল আশংকা থাকে, তাহলে খিলাল করা সুন্নত নয়, বরং ফরজ হয়ে যায়।