নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফজরের নামাজের পর স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী ও দুর্বৃত্তরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ দরবারের অনুসারীদের।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স:) উদযাপনের বিষয়ে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে জুম্মার নামাজের পর প্রস্তুতিমূলক সভা ও মিলাদ মাহফিল করার কথা ছিল। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে ঈদে মিলাদুন্নবী বিরোধী স্থানীয় লোকজন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরণের পোস্ট দেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে রাত থেকেই উত্তেজনা চলছিল।
তারা আরও জানান, শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আশপাশের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ানবাগ দরবার শরীফে হামলা চালানো হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন ও দুর্বৃত্তরা প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে দুটি টিনের ঘরসহ কয়েকটি পাকা স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। হামলায় আহত হন অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায় এবং বন্দর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক বলেন, দরবার শরীফের ভেতরে প্রায় সবগুলো স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমাদের দুইটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
বন্দর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, শুক্রবার ফজরের নামাজের পর মসজিদের মাইকে ঘোষণা করে স্থানীয় লোকজন দরবারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি।
দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার কয়েকজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নিয়ে দরবার শরীফ পরিদর্শন করেন।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এটি খুবই ন্যক্কারজনক একটি ঘটনা। পরবর্তীতে আর যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরীকুল ইসলাম ও বন্দর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক।