ফরজ নামাজের পর তিন তাসবিহের আমল যেভাবে এলো

ধর্ম ডেস্ক
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:০৯

পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তিন তাসবিহ অর্থাৎ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়ার আমলটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এ আমলটি এসেছিলো আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে দরিদ্র সাহাবিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে। তারা নবিজিকে (সা.) বলেছিলেন সম্পদশালী সাহাবিরা দান-সদকা করে নেক কাজে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের তো দান-সদকা করার মতো সামর্থ্য নেই। তখন নবিজি (সা.) এ আমলটি তাদের করতে বলেন।

আবু জর বলেন, নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলা হলো, হে আল্লাহ্‌র রাসুল! বিত্তবান লোকেরা সওয়াবের ক্ষেত্রে আমাদের থেকে এগিয়ে গেছে। আমরা যা বলি, তারাও তা বলে এবং তারা ধন-সম্পদ ব্যয় করে, কিন্তু আমরা তা পারি না। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি আপনাদের এমন আমল বলে দিচ্ছি, যা করলে আপনারা আপনাদের অগ্রবর্তীদের ধরতে পারবেন এবং আপনারা যাদের অগ্রবর্তী তারা আপনাদের অতিক্রম করতে পারবে না। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর আলহামদুল্লিাহ, সুবহানাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার ৩৩ বার, ৩৩বার এবং ৩৪ বার পাঠ করুন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৯২৭)

সওয়াব অর্জনের পথ অনেক
দরিদ্র সাহাবিরা যে ধারণা করেছিলেন যে দান-সদকার সুযোগ পাওয়ার কারণে সম্পদশালী সাহাবিরা সওয়াবের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, দরিদ্রদের সদকা করার সামর্থ্য নেই বলে তারা পিছিয়ে থাকছে, এই ধারণাও সঠিক ছিল না। আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, নবিজি তাদের বলেছিলেন কীভাবে দরিদ্ররাও সদকা করতে পারে বা অন্যান্য নেক আমল করে সওয়াব অর্জন করতে পারে। আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, কিছু সাহাবি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সম্পদশালীরাই তো বেশী নেকির অধিকারী হয়ে গেল। তারা নামাজ পড়ছে যেমন আমরা নামাজ পড়ছি, তারা রোজো রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত সম্পদ থেকে তারা সদকা করছে।
নবিজি (সা.) বললেন, আল্লাহ কি আপনাদের সদকা করার মতো কিছু দান করেননি? নিঃসন্দেহে প্রত্যেক তাসবিহ সদকা, প্রত্যেক তাকবির সদকা, প্রত্যেক তাহলিল সদকা, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সদকা ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সদকা এবং স্ত্রী-মিলন করাও সদকা।
সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের যৌনক্ষুধা নিবারণ করলেও কি তার সওয়াব হবে?
তিনি বললেন, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে না? তাই সে যদি বৈধভাবে নিজের কামক্ষুধা নিবারণ করে, তাহলে তাতে তার সওয়াব হবে। (সহিহ মুসলিম: ২৩৭৬)
অর্থাৎ সদকা না করতে পারলেও তারা জিকির করে সওয়াব অর্জন করতে পারে, একইভাবে দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও গুনাহ থেকে বেঁচে তাকওয়ার পথে থাকা, পরিবার পরিজনের জন্য উপার্জন এবং তাদের সাথে উত্তম আচরণের মাধ্যমেও তারা সওয়াব অর্জন করতে পারে।