বিতর অর্থ বিজোড়। বিতর নামাজের রাকাত বিজোড় সংখ্যক বিধায় এটিকে বিতর নামাজ বলা হয়। ইশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত বিতর পড়া যায়। প্রতিদিন এ সময়ের মধ্যে বিতর নামাজ পড়া ওয়াজিব। বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, বিতরের নামাজ আবশ্যক বা ওয়াজিব তাই যে ব্যক্তি বিতরের নামাজ আদায় করল না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪১৯)
রাতে ইশার নামাজ, ইশার সুন্নত নামাজ ও নফল নামাজের পর সবশেষে বিতর নামাজ আদায় করা সুন্নত। নবিজি (সা.) সাধারণত রাতের সর্বশেষ নামাজ হিসেবে বিতর নামাজ আদায় করতেন। সাহাবিদেরও তিনি রাতের সর্বশেষ নামাজ হিসেবে বিতর আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে রাসুল (সা.) বলেছেন, আপনারা বিতরকে রাতের সর্বশেষ নামাজ বানান। (সহিহ বুখারি: ৪৭২, সহিহ মুসলিম: ৭৪৯)
যদিও বিতর নামাজের পরও নফল নামাজ আদায় করা যায়। বিতরের পর নফল নামাজ আদায় করলে তা নাজায়েজ বা মাকরুহ হবে না।
সহিহ মুসলিমের একটি বর্ণনায় এসেছে যে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিতরের পর বসে দুই রাকাত নামাজ পড়েছেন। (সহিহ মুসলিম: ৭৩৮)
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় সহিহ মুসলিমের প্রখ্যাত ব্যাখ্যাকার ইমাম নববি (রহ.) লিখেছেন যে, বিতরের পর দুই রাকাত নামাজ নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিয়মিত পড়েননি। বরং বিতরের পরও নফল পড়া জায়েজ আছে এবং নফল নামাজ বসে পড়া জায়েয আছে- তা বোঝানোর জন্য কখনো হয়তো এ রকম আমল করেছেন।
কারণ একটি হাদিসে বিতরের পর নফল নামাজ আদায়ের কথা পাওয়া গেলে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত বিভিন্ন হাদিসে এসেছে যে, রাতে নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বশেষ নামাজ হত বিতর নামাজ এবং তিনি সাহাবায়ে কেরামকেও নির্দেশ দিতেন, বিতরকে রাতের সর্বশেষ নামায বানান। (শরহে মুসলিম: ৬/২১)
তাই রাতে বিতরের পর কোনো সুন্নত নামাজ নেই। সব সুন্নত ও নফল নামাজ শেষ করে বিতর পড়াই সুন্নত। কেউ যদি বিতরের পরও নফল পড়ে তাহলে সেটা জায়েজ হবে। কিন্তু এটাকে সুন্নত বা মুস্তাহাব হিসেবে নিয়মিত আমল বানানো ঠিক নয়।