ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করলেন কমলা হ্যারিস

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২

ভোটের মাসে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নভেম্বরের প্রথম দিনে পড়ে নির্বাচনের মাঠ আরও সরগরম হয়ে উঠেছে। ৫ নভেম্বর নির্বাচনের মাত্র চার দিন বাকি থাকতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারে তার আক্রমন রিপাবলিকান দলেরই সাবেক কংগ্রেসওম্যান লিজ চেনির ওপর। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনিকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেছেন, তার মুখের ওপর গুলি করা উচিত। সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন বক্তব্য তার সহিংস চেহারাটাকেই সামনে এনেছে। ট্রাম্প বলেছেন, এই নারীকে কমব্যাটে পাঠানো নয়, স্রেফ ফায়ারিং স্কয়াডে পাঠানো উচিত। ট্রাম্প কেনো এ কথা বলেছেন, সে কথা জানানোর আগে বলছি, তার এই বক্তব্য অ্যারিজোনার স্টেট ল’ কে কতটুকু লঙ্ঘন করলো সেটাই এখন দেখার বিষয়। অ্যারিজোনার এটর্নি জেনারেল ক্রিস মায়েস বলেছেন, তারা বিষয়টি ঘেঁটে দেখছেন। আর লিজ চেনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করলেই এমন আক্রমনের মুখে পড়তে হচ্ছে যে কেহকে।

“স্বৈরাচাররা এভাবেই একেকটি জাতিকে ধ্বংস করে,” ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন লিজ। এর আগে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমালোচনা করে প্রতিনিধি সভায় রিপাবলিকান দলের নেতৃত্ব হারাতে হয় লিজ চেনিকে। পরে তিনি ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্তে গঠিত কমিটির ভাইস চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। চেনি বলেছেন, ওই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলেছে, তাদেরই হুমকি পেতে হয়েছে। আমরা আমাদের দেশ ও স্বাধীনতাকে কোনো প্রতিহিংসাপরায়ন, ক্রুর, অস্থিতিশীল স্বেচ্ছাচারীর হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। আর তারই প্রতিউত্তরে তাকে শুনতে হয়েছে, ফায়ারিং স্কয়াডে মুখে গুলি করার হুমকি। ট্রাম্প তার এই হুমকি কোনো জনসভায় নয়, বরং টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন। ফক্স নিউজের সাবেক হোস্ট টাকান কার্লসনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তাকে দাঁড় করিয়ে একটি নাইন ব্যারেল রাইফেল মুখের উপর তাক করে তবেই গুলি চালাতে হবে, বলেন ট্রাম্প।

কেবল যে লিজ চেনিকে তাই নয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প হত্যার হুমকি দিয়েছেন আমেরিকার উচ্চ পর্যায়ের জেনারেল মার্ক মাইলিকেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, তার কর্মকাণ্ডের সাজা স্রেফ মৃত্যু। জেনারেল মার্ক ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে আক্রমনের সাথে চীনের সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা জানতে একটি ফোনকল করেছিলেন। সম্প্রতি দ্য আটলান্টিকে জেনারেল মার্ক মাইলিকে নিয়ে একটি স্টোরি হওয়ার পর এমন মন্তব্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই স্টোরিতে উল্লেখ করা হয়, জেনারেল মার্ক মাইলি সেদিন ট্রাম্পের হাত থেকে গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দিতেই ওই ফোন কল করেছিলেন। আর এতেই ক্ষেপেছেন ট্রাম্প।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের এসব বক্তব্যের কঠোর সমালোচনায় মেতেছেন। বলেছেন, প্রতিনিয়তই তার বক্তব্য আরও সহিংস হয়ে উঠেছে। এটা তার অযোগ্যতাই প্রমাণ করে। ক্রমেই ট্রাম্প অস্থিতিশীল হয়ে উঠছেন, বলেন কমলা হ্যারিস। শুক্রবার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, দুজনই উইসকনসিনে সময় কাটান। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ডেমক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের লড়াইয়ের একটি ব্যটলগ্রাউন্ড। এই দিন মিশিগানেও প্রচার চালিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে জরিপগুলো দেখাচ্ছে মিশিগান ও উইসকনসিনে পাল্লা সামান্য হলেও কমলা হ্যারিসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তবে পেনসিলভেনিয়ায় এখনো দুই পক্ষের অবস্থানই সমানে সমান। এছাড়াও সারা দেশেই দুই পক্ষের অবস্থান এখনো কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান।