আগামীকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

শেষ প্রচারণায় ব্যস্ত ট্রাম্প ও কমলা 

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৩৩
আপডেট  : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০৯

আগামীকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।তার আগে প্রচারণার শেষ রবিবার ব্যস্ত সময় কাটান ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার মিশিগানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আরব আমেরিকানদের কাছে শেষ বক্তব্য দেন কমলা। পেনসিলভেনিয়ার একটি সমাবেশে সহিংস ভাষা ব্যবহার করেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, উভয় প্রার্থীই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে আছেন। ৬০ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা নারীদের মধ্যে শক্তিশালী সমর্থন পাচ্ছেন। আর ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশেষ করে পুরুষ হিস্পানিক ভোটারদের সমর্থন লাভ করছেন।
রয়টার্স/ইপসস জরিপ অনুযায়ী, ভোটাররা উভয় প্রার্থীকেই নেতিবাচকভাবে দেখছেন। তবে তাতে ভোটদানে ভাটা পড়েনি। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ইলেকশন ল্যাব অনুসারে, ইতোমধ্যেই ৭৮ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন। এই সংখ্যা ২০২০ সালের মোট ১৬০ মিলিয়ন ভোটের প্রায় অর্ধেক। ওই বছর ভোটার উপস্থিতি শতাব্দীর মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
রবিবার শক্তিশালী স্যুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত মিশিগানের একটি ঐতিহাসিক কৃষ্ণাঙ্গ চার্চেও গিয়েছিলেন কমলা। ডেট্রয়েটের গ্রেটার ইমানুয়েল ইনস্টিটিউশনাল চার্চ অব গড ইন ক্রাইস্ট-এর প্যারিশনারদের তিনি বলেন, মঙ্গলবার আমরা আমাদের জাতির ভাগ্য পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করব। সেজন্য আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু প্রার্থনা করা যথেষ্ট নয়,  শুধু কথা বলাও যথেষ্ট নয়।
পরে মিশিগানের ইস্ট ল্যানসিংয়ে একটি সমাবেশে তিনি প্রায় ২ লাখ আরব আমেরিকানদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি যুদ্ধে বেসামরিক হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শুরু করেন। বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি গাজার যুদ্ধ শেষ করতে আমার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব।


আরব ও মুসলিম আমেরিকান এবং যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী গাজা ও লেবাননে হাজার হাজার বেসামরিক মৃত্যু ও লাখো মানুষের স্থানচ্যুতির জন্য ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে রবিবার তার তিনটি সমাবেশ করেন ট্রাম্প। প্রথম সমাবেশে হ্যারিসের পক্ষে অগ্রগতি দেখানোয় জরিপগুলোর সমালোচনা করেন তিনি। ডেমোক্র্যাটদের ‘শয়তানি দল’ বলে আখ্যায়িত করেন। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উপহাস করেন এবং আপেলের উচ্চ মূল্যের বিষয়ে কথা বলেন। এছাড়া তিনি সংবাদমাধ্যমগুলোরও সমালোচনা করেন।


জুলাইয়ে পেনসিলভেনিয়ার বাটলার হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেলেও এক বন্দুকধারীর গুলি তার কান ছুঁয়ে যায়।  রবিবার সমর্থকদের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, তার চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাচের ব্যবস্থায় ফাঁক ছিল। সংবাদমাধ্যমগুলোকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আমাকে গুলি করতে হলে সংবাদমাধ্যমকে ভেদ করে গুলি করতে হবে।’
পরে ট্রাম্প নর্থ ক্যারোলিনার কিন্সটন এবং জর্জিয়ার ম্যাকনে ভাষণ দেন। সমাবেশে তিনি গত সপ্তাহের চাকরির প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন অর্থনীতি গত মাসে মাত্র ১২ হাজার চাকরি তৈরি করেছে।
সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, এই প্রতিবেদনটি প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘অবক্ষয়িত জাতি’। তিনি কোনও প্রমাণ ছাড়াই সতর্ক করে দেন যে ১৯২৯ সালের মহামন্দার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা রয়েছে!
পেনসিলভেনিয়ায় তার ভাষণের শেষের দিকে ট্রাম্প দাবি করেন, ২০২০ সালে তার পরাজয় জালিয়াতির কারণে হয়েছিল। ট্রাম্প তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে নির্বাচনের ফলাফল নির্বাচন রাতেই ঘোষণা করা উচিত। যদিও একাধিক রাজ্যের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে চূড়ান্ত ফলাফল জানতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।