কমলার পরাজয়ে বাইডেনকে দোষ দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটরা

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তার এই পরাজয়ে হতবাক পার্টির কর্মকর্তারা। এমনকি ভোটার ও সমর্থকরাও। বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে ফলাফল প্রায় নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে ক্ষোভ এবং আত্মসমালোচনা করতে দেখা গেছে ডেমোক্র্যাটদের। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে, মাত্র তিন মাস আগে নির্বাচনি দৌড়ে অংশ নিয়েছিলেন কমলা হ্যারিস। কিন্তু তার পরাজয়ের প্রকৃতি ডেমোক্র্যাটদের অনেককেই দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করছে।
বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে মিথ্যার সমালোচনা করেছেন সমর্থক ও কর্মীরা।
এক ডেমোক্র্যাট দাতা প্রশ্ন করেছেন, ‘জো বাইডেন কেন এতদিন ধরে অবস্থান ধরে রেখেছিলেন? কেন তিনি আরও আগে সরে দাঁড়াননি?’
৮১ বছর বয়সী বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, তিনি একমাত্র ডেমোক্র্যাট যিনি ট্রাম্পকে পরাজিত করতে পারবেন এবং প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে তিনি আরও চার বছর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। জুলাইয়ে দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় তিনি বলেছিলেন,এটি আমার পার্টি এবং দেশের সর্বোত্তম স্বার্থে।
হ্যারিসের প্রচার শিবির মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং হোয়াইট হাউজও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্যে সাড়া দেয়নি।
নারী এবং তরুণ ভোটারদের অভাব
দুইটি দলের ওপর নির্ভর করে কমলা ট্রাম্পকে পরাজিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ক্রমবর্ধমান বৈচিত্র্যময় তরুণ ভোটার। আর রিপাবলিকানদের অধীনে সংকুচিত গর্ভপাত অধিকার নিয়ে উদ্বিগ্ন নারীরা।
এডিসন রিসার্চ এক্সিট পোলের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের অধীনে ৪৫ বছরের কম বয়সী ভোটারদের অংশীদারিত্ব ২০২০ থেকে দুই শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। পাশাপাশি নারী ভোটারদের অংশীদারিত্বও বেড়েছে। ট্রাম্প অনেক শহরতলি এলাকায় তার সমর্থন বাড়িয়েছিলেন।
একজন ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি মঙ্গলবার গভীর রাতে দলের সদস্যদের কাছ থেকে ক্ষুব্ধ মেসেজ পেয়েছেন।
ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী বক্তব্য এমনকি কানেকটিকাট এবং ম্যাসাচুসেটসের মতো ডেমোক্র্যাটিক কেন্দ্রেও সাড়া ফেলেছে।
কমলার এই পরাজয় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটদের তিনটি নির্বাচনের মধ্যে দ্বিতীয় তিক্ত পরাজয়। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটনের পরাজয়ের ফলে বাইডেনের প্রার্থী হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছিল।
ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত অপরাধী,তার অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো বিশেষ করে আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ, মার্কিন ভোক্তা এবং ব্যবসার জন্য ব্যয়বহুল হবে বলে অর্থনীতিবিদরা বলছেন। তার পরিকল্পনা অনুসারে লক্ষ লক্ষ অবৈধভাবে বসবাসকারীকে বহিষ্কার করলে অনেক শিল্প এবং সম্প্রদায় বিপর্যস্ত হবে। তারপরও ট্রাম্প লাতিনো ভোটারদের মধ্যে সমর্থন পেয়েছেন এবং জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনাতে সহজ জয় লাভ করেছেন।
বাইডেন এবং হ্যারিস গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ইসরায়েলকে সমর্থন করায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে মতভেদ তৈরি হয়।  অনেক প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট ইসরায়েলে সামরিক সহায়তা কমানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর ফলে বামপন্থী ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ভোট হারাতে হয়েছে বলে ধারণা অনেকের।