যুক্তরাষ্ট্রের আধুনিক কালের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর আগামী মন্ত্রিসভাকে সাজিয়েছেন। তবে এই ব্যক্তিদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ট্রাম্প পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেখেছেন যিনি, তিনি তাঁর ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের প্রভাবশালী ওই ভূমিকা রাখার বিষয়ে অবগত—এমন ছয়টি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্রগুলো বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন গঠনে অধিকতর যোগ্য ব্যক্তিদের চেয়ে অনভিজ্ঞ ও অনুগত লোকজনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
একান্ত অনুগত ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করা ট্রাম্পের জন্য নতুন ঘটনা নয়। রাজনৈতিক পরামর্শ গ্রহণ করার বিষয়ে তাঁকে দীর্ঘদিন ধরেই নিজ পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল থাকতে দেখা গেছে। তবে তাঁদের পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্নতাও আছে।
ট্রাম্প জুনিয়র যে শুধু মন্ত্রিসভার সদস্যদের ওঠানো-নামানোতেই তাঁর বাবাকে সহায়তা করেছেন, তা নয়; মন্ত্রিসভায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর নিয়োগ আটকে দেওয়া থেকে শুরু করে জে ডি ভ্যান্সকে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনীত করাতেও ছিল তাঁর ভূমিকা। তাঁর পরামর্শেই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন রিপাবলিকান পার্টিকে অনুদান দেওয়া ব্যক্তিরা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত বন্ধু, রাজনৈতিক মিত্ররা।
সূত্রগুলোর ভাষ্যমতে, ছেলে ট্রাম্প জুনিয়র যে শুধু মন্ত্রিসভার সদস্যদের ওঠানো–নামানোতেই তাঁর বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তা করেছেন, তা–ই নয়; মন্ত্রিসভায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর নিয়োগ আটকে দেওয়া থেকে শুরু করে নিজ বন্ধু জে ডি ভ্যান্সকে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনীত করাতেও ছিল ট্রাম্প জুনিয়রের হাত। তাঁর পরামর্শেই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির অনুদানদাতারা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত বন্ধু ও রাজনৈতিক মিত্ররা।
ট্রাম্প জুনিয়র রক্ষণশীলদের (রিপাবলিকান পার্টি) ভেনচার ক্যাপিটাল ফান্ড ‘১৭৮৯ ক্যাপিটাল’–এ যোগ দেবেন। যদিও একটি সূত্র বলেছে, তিনি তাঁর রাজনীতিঘনিষ্ঠ পডকাস্ট সঞ্চালনা করা এবং ট্রাম্পের রাজনীতি সমর্থন করেন—এমন ব্যক্তিদের নানাভাবে সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখবেন।
সূত্র আরও বলেছে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসার পর প্রশাসন পরিচালনা করতেও তাঁকে পরামর্শ দেবেন ট্রাম্প জুনিয়র। তবে দৈনন্দিন কাজে ট্রাম্পকে সহায়তা করায় তিনি যুক্ত থাকবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে দলের বক্তব্য জানতে চাইলে ট্রাম্প জুনিয়র ও ট্রাম্প-ভ্যান্স তাতে সাড়া দেননি।
এ সময়ের বাস্তবতা হলো, আমরা কী করছি, সে সম্পর্কে আমরা ঠিকঠাক জানি। আমার বাবার চারপাশে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা যোগ্য ও অনুগত—উভয়ই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছেলে
ট্রাম্প প্রশাসনে যাঁদের বাছাইয়ে ট্রাম্প জুনিয়র ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে দুজন—রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ও তুলসী গ্যাবার্ডকে তাঁদের নিয়োগ পাকাপাকি করতে সিনেটের জটিল অনুমোদনপ্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। কেনেডি জুনিয়রকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্য কমকর্তা ও গ্যাবার্ডকে গোয়েন্দাপ্রধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কেনেডি জুনিয়র একজন পরিবেশকর্মী। করোনা মহামারি চলাকালে টিকা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ান তিনি। অন্যদিকে গ্যাবার্ড একজন সাবেক ডেমোক্রেটিক কংগ্রেস সদস্য। তিনি এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ইউক্রেনে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যৌক্তিক ভিত্তি আছে। আবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ যখন ২০১৭ সালে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর রক্তক্ষয়ী দমনাভিযান চালাচ্ছিলেন, সেই সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিতর্কের জন্ম দেন গ্যাবার্ড।
ট্রাম্প প্রশাসনে বাণিজ্যমন্ত্রী হচ্ছেন ধনকুবের হওয়ার্ড লাটনিক
এদিকে ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দুই সূত্র বলেছে, তিনি সব কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্তে প্রভাব রাখছেন না এবং ক্ষমতা হস্তান্তরপ্রক্রিয়া বা ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে পুরো সময় কাজ করছেন না।
ট্রাম্প প্রশাসনে যাঁদের বাছাইয়ে ট্রাম্প জুনিয়র ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের—রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ও তুলসী গ্যাবার্ড—নিয়োগ পাকাপাকি করতে সিনেটের জটিল অনুমোদনপ্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। কেনেডি জুনিয়রকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্য কমকর্তা ও গ্যাবার্ডকে গোয়েন্দাপ্রধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প–সমর্থক সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বলেছিলেন, ‘এ সময়ের বাস্তবতা হলো, আমরা কী করছি, সে সম্পর্কে ঠিকঠাক জানি। আমার বাবার চারপাশে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা যোগ্য ও অনুগত—উভয়ই।’