নিউইয়র্ক সিটিতে গত ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে যে হারে ইমিগ্রান্ট আসতে শুরু করেছিল, তা চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রায় সোয়া দুই লাখে উন্নীত হয়েছে। নবাগত ইমিগ্রান্টদের আশ্রয়সহ সকল ব্যবস্থা করতে সিটিকে ইতোমধ্যে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী অভিযান চলাকালে ইমিগ্রান্টদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দিয়ে আসছিলেন, যে হুমকি আরো প্রবল হয়েছে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর।
আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ ইমিগ্রান্ট মুক্ত করতে সকল উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তার এই হুমকির ফলে আতোমধ্যে মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি অনুপ্রবেশ লক্ষ্যণীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। শুধু সীমান্তেই নয়, নিউইয়র্ক সিটির ইমিগ্রান্ট আশ্রয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইমিগ্রান্ট সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে এবং বাসযোগে টেক্সাস থেকে নতুন কোনো ইমিগ্রান্টকে নিউইয়র্ক সিটিতে আসতে দেখা যাচ্ছে না।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ইমিগ্রান্টদের ঢালাও আগমণের দুই বছর পর নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের উর্ধতনরা সতর্কতার সাথে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন যে, সিটিতে ইমিগ্রান্ট সংকট ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে এবং ইমিগ্রান্টদের প্রতি সিটির জরুরি দায়িত্ব পালনের বিষয়গুলো নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, দক্ষিণ সীমান্ত থেকে কম সংখ্যক ইমিগ্রান্ট নিউইয়র্কে আসছে। শুধু তাই নয়, যারা সিটিতে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের মধ্য থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইমিগ্রান্ট প্রতি সপ্তাহে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপকভাবে ডিপোর্ট করার হুমকি ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মধ্যে এ অনিশ্চয়তা বোধ করার প্রবণতা আসলে শুরু হয়েছে নির্বাচনী অভিযান যখন তুঙ্গে ছিল।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ট্রাম্পের ইমিগ্রান্ট ডিপোর্ট করার হুমকি কমবেশি প্রায় পাঁচ যাবত দেওয়া হচ্ছে এবং তখন থেকে সীমান্ত অতিক্রম কমতে শুরু করেছে। বলা যায়, মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ বিদেশি অতিক্রম রেকর্ড পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় নিউইয়র্ক সিটির আশ্রয়কেন্দ্রে ইমিগ্রান্ট সংখ্যা টানা ১৯ সপ্তাহ ধরে কমেছে।
গত ১৭ নভেম্বর পর্যš সিটির ২১০টি আশ্রয়কেন্দ্র, হোটেল এবং তাঁবু কমপ্লেক্সে মোট ৫৭,৪০০ ইমিগ্রান্ট বসবাস করছিল, যা গত বছরের শুরুতে ৬৯ হাজার ছিল। সেই হিসেবে আশ্রয় কেন্দ্রে ১৭ শতাংশ ইমিগ্রান্ট কমেছে। গত দুই বছর ধরে সিটি ২ লাখ ২৩ হাজার এর বেশি নবাগত ইমিগ্রান্টের আবাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। ট্রাম্পের ডিপোর্টেশন হুমকি ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের আশার ওপর পানি ছিটিয়ে দিয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।