কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন পথে

ডেস্ক রিপোর্ট
  ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:৩২

বিশ্বজুড়ে কয়েক মাস ধরে ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নির্বাচনী প্রচারে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ইতিহাস গড়ার। হোয়াইট হাউসের চাবি হাতে পেলে তিনিই হতেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে গেছেন কমলা হ্যারিস। এতে সাফল্যের শিখরের দিকে দ্রুত ছুটে চলা এ ডেমোক্র্যাট নেতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হঠাৎই যেন থমকে গেছে, নেমে এসেছে অসাড়তা। এ অবস্থায় কমলা এখন কী করবেন, সেটি জানতে আগ্রহী মার্কিনদের মতো আরও অনেকেই।
ভোটে হেরে কিছুদিন হাওয়াইয়ে কাটিয়েছেন কমলা। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে সাবেক এই কৌঁসুলি নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। দলের তহবিল সরবরাহকারীদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমি লড়াইয়ের ময়দান ছাড়িনি।’ তবে তিনি কীভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ জন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগে গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন। সে তালিকায় সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দারুণ জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের একজন রিগ্যান। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ছিলেন।
কমলার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা নিয়ে ওয়াশিংটনে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, তিনি তাঁর অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হওয়ার দৌড়ে নামতে পারেন। বর্তমান গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গরাজ্যের গভর্নরের পদ সম্মানের, প্রভাবশালীও বটে। সেখানে একেকটি অঙ্গরাজ্যের আয়তন কোনো কোনো দেশের সমান। এ ছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতি বিশ্বে পঞ্চম বৃহৎ।
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুলিয়ান জেলিজের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল অঙ্গরাজ্যের নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেলে কমলা জাতীয় রাজনীতির মাঠে নিজেকে একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে পুনরায় জাহির করার বিশাল এক মঞ্চ পেয়ে যাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ জন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগে গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন। সে তালিকায় সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দারুণ জনপ্রিয় প্রেসিডেন্টদের একজন রিগ্যান। তিনি ষাটের দশকের শেষে ও সত্তরের দশকের শুরুতে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল অঙ্গরাজ্যের (ক্যালিফোর্নিয়া) নেতৃত্ব দেওয়ার (গভর্নর হওয়ার) সুযোগ পেলে কমলা হ্যারিস জাতীয় রাজনীতির মাঠে নিজেকে একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে আবার জাহির করার বিশাল এক মঞ্চ পেয়ে যাবেন।
জুলিয়ান জেলিজের, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
যদিও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দল থেকে কমলাকে বেছে নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এবারের নির্বাচনে সাত দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের সব কটিতে ট্রাম্পের কাছে হেরেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জয়-পরাজয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো। নির্বাচকমণ্ডলীর প্রতিটি শাখায় কমলার চেয়ে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। তাই পরবর্তী নির্বাচনে কমলার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
অধ্যাপক জেলিজার বলেন, ‘সমস্যা হলো, যখন আপনি একবার হেরে যাবেন এবং এত বড় ব্যবধানে হারবেন, দলের অনেকে তখন আপনার ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবেন। আপনি পুনরায় বড় কিছু জয় করতে পারেন, সেই আস্থা তাঁদের থাকবে না।’
তাই দুই বছরের জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হতে পারলেও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে নামতে কমলাকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে বিশ্বাস কয়েকজন বিশ্লেষকের।
২০১৯ সাল থেকে গ্যাভিন নিউসম ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে কমলার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন তিনি।