টম হোম্যানের সতর্ক বার্তা

গণ-ডিপোর্টেশনে বাধা প্রধানকারীদের কঠোর পরিণতির হুশিয়ারী

ডেস্ক রিপোর্ট
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:১৪

যারা গণ-ডিপোর্টেশনে বাঁধা দিবেন, তাদের কঠোর পরিণতির হবে বলে জানিয়েছেন নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ডার জার খ্যাত টম হোম্যান। টেক্সাসের ঈগল পাসে সীমান্ত পরিদর্শনের সময়, এ কথা বলেন তিনি। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকিধারীদের প্রথম ধাপে গণ-ডিপোর্টেশন করা হবে বলে জানান হোম্যান। এদিকে গণ-নির্বাসনে সহায়তায় প্রস্তুত রাখা হচ্ছে শেরিফদের।
যারা অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে তাদের পরিকল্পিত গণ নির্বাসন থেকে বাধা দেয়ার হুমকি দিচ্ছে -তাদের উদ্দেশ্যে হোম্যান বলেছেন, তাদের নিয়ে যেনো কোনো পরীক্ষা না করা হয় "। এ সময় তার সাথে ছিলেন টেক্সাসের গভর্ণর গ্রেগ অ্যাবট। বাঁধাদানকারীদের উদ্দেশ্যে হোম্যান বলেছেন, "যদি আমরা এটি না করি, তাহলে বিকল্প কি? কারণ আপনি যদি তাদের থাকতে দেন তবে আপনি কখনই সীমান্ত ঠিক করতে পারবেন না। তিনি বলেছেন, তারা কি বাকি বিশ্বের কাছে একটি বার্তা পাঠাতে যাচ্ছে? এ দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করা যায়, যা একটি অপরাধ। যদি এ ধরনের ইচ্ছা কেউ পোষণ করে থাকেন, তাহলে তাদের সে ইচ্ছা পূরণ হবে না বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকিধারীদের প্রথম ধাপে গণ-ডিপোর্টেশন করা হবে
এদিকে জন নিরাপত্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকিধারীদের প্রথম ধাপে গণ-ডিপোর্টেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন টম হোম্যান। বাসে করে স্যাংকচুয়ারী সিটি থেকে গণডিপোর্টেশনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত বলেও জানিয়েছেন এক্ষেত্রে নিউইয়র্ক, টেক্সাসের মতো স্যাংকচুয়ারী সিটিগুলোকে সহায়তা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
তাঁর ভাষ্যমতে গণডিপোর্টেশনের প্রথম পরিকল্পনায় পাবলিক ও জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকিধারীদের প্রথম ধাপে গণ-ডিপোর্টেশন করা হবে। টেক্সাস অভিবাসী বাসগুলিকে র‌্যাম্প করার পরিকল্পনার দিকে নজর দিচ্ছে। স্যাংকচুয়ারী সিটি থেকে গণ-ডিপোর্টেশনের ক্ষেত্রে বাস ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদেও স্যাংকচুয়ারী সিটিতে পাঠানোর পরিবর্তে, কর্মকর্তারা সরাসরি আইসিই হোল্ডিং সেন্টারে পাঠাবেন। যাতে তাদের নির্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত করা যায়।
টেক্সাস প্রশাসনের একটি সূত্র বলেছে, "যতদিন তারা একটি সীমান্ত রাজ্য আছে, ততদিন তারা সীমান্ত নিরাপত্তার সাথে জড়িত থাকবে। প্রস্তাবিত পরিকল্পনার অধীনে, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই এজেন্টদের আরও দ্রুত প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে সীমান্তের শহরগুলি থেকে টেক্সাসের ভাড়া করা বাসগুলিকে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো এবং ডেনভার সহ অভয়ারণ্য শহরগুলি থেকে ফেডারেল আটক কেন্দ্রগুলিতে ফেরত পাঠানো হবে। টেক্সাস ইতিমধ্যেই অবৈধ অভিবাসী অপরাধীদের ধরে রাখার জন্য নির্বাসন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আগত ট্রাম্প প্রশাসনকে সীমান্তে জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
২০২২ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ১,২০,০০০ অভিবাসীকে সীমান্ত থেকে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, ফিলাডেলফিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং শিকাগোতে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৫,৯০০ অভিবাসীকে শুধুমাত্র নিউইয়র্ক সিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
গণ-নির্বাসন মেনে নেবেন না ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন:
ডোনাল্ড ট্রাম্পের গণ-নির্বাসন পরিকল্পনা মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন। আর এ গণনির্বাসনে বাঁধা দেয়ার কথা বলায় ডেমোক্র্যাটিক ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টনকে জেলে রাখার ইচ্ছার কথা বলেছেন টম হোম্যান।
দ্বিতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে গণ-নির্বাসনের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প ও তাঁর নিয়োজিত টম হোম্যান। বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার এবং প্রক্রিয়া নিযে প্রায়ই কোনো না কোনো দিন নতুন নতুন ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এসব পরিকল্পনা মানতে নারাজ বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন। গুরুতর অপরাধী ছাড়া গণ-নির্বাসনের পক্ষে তিনি নন বলে জানিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে টম হোমান গণ-নির্বাসনে বাঁধাদানকারীদের পরিণতি’র কথা স্মরণ করিয়ে মাইক জনস্টনকে জেলে রাখার ইচ্ছার কথা বলেন হোম্যান।
তবে, তার এই হুমকিতে নিজ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না বলে গণমাধ্যমে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ডেনভারের মেয়র মাইক জনস্টন।
গণ-নির্বাসনে সহায়তায় প্রস্তুত রাখা হচ্ছে শেরিফদের:
অবৈধ অভিবাসীদের গণ-নির্বাসনে সহায়তায় প্রস্তুত রাখা হচ্ছে শেরিফদের। এমন পরিকল্পনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসী গণ-নির্বাসন প্রক্রিয়ায় শেরিফদের যথাযথ প্রশিক্ষণ রয়েছে। গুরুতর অপরাধী কিংবা জন-নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন অপরাধী ধরতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা, সংশ্লিষ্ট অভিবাসন কর্মকর্তাদের তারা সাহায্য করবেন। বাইডেন প্রশাসন তাদের এমন কাজে নিয়োজিত না করলেও, ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই অবৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়ায় আইসিই কর্মকর্তাদের সহায়তায় কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্যাংকচুয়ারী সিটির হাজারের বেশি শেরিফ এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, তাদের দায়িত্ব পালনে চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন।